ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোয়াজ্জিন আশিক ওরফে কফেলকে(১৯) পুলিশ গ্রেপ্তার করেছেন।
রবিবার দুপুর আড়াইটায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আহসান হাবিব পৌর শহরের মহিলা কলেজ রোডস্থ আক্তারুজ্জামান কিন্ডার গার্টেনের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। এর পূর্বে একই ঘটনার সহযোগী আসামী মাদরাসা শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান ইছামুদ্দিনকেও(১৮) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ইছামুদ্দিন ময়মনসিংহ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারুক্তিমূলক জবান বন্দি দেয়।
জানা যায়, উপজেলার পুখুরিয়া দারুল আরাবিয়া কাছিমুল উলুম মাদরাসায় পড়ার সুবাদে স্থানীয় ধোপাঘাট গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে মাহফুজুর রহমান ওরফে ইছামুদ্দিন, নান্দাইল উপজেলার উত্তর তারাপাশা গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে আরিফ ও আয়নাল হকের ছেলে আশিক ওরফে কফেল এর বন্ধুত্ব হয়। তিন বন্ধুর মধ্যে আশিক ওরফে কফেল যশরা ইউনিয়নের পাড়া ভরট জামে মসজিদে মোয়াজ্জিনের চাকুরী করে। প্রায় এক বছর আগে পাশ্বর্তী আঠারোদানা গ্রামের দরিদ্র আব্দুল মতিনের এসএসসি পাশ মেয়ে তাকমিনার সাথে আশিক ওরফে কফেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে কফেল বহুবার মেয়েটির সাথে মিলিত হয়। গত সোমবার রাত সোয়া ২টার দিকে বন্ধু মাহফুজুর রহমান ওরফে ইছামুদ্দি ও আরিফ যোগসাজসে মোবাইলে মেসেজ দিয়ে মেয়েটিকে বাড়ি থেকে ডেকে পারাভরট জামে মসজিদের পাশের জনৈক রমজান আলীর ভিটায় নিয়ে আসে। পরে মাহফুজুর রহমান ওরফে ইছামুদ্দিন ও আরিফ পাহারা দেয় এবং কফেল মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটি কফেলকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় এবং বলে ‘আমাকে বিয়ে না করলে বড় হুজুরকে বলে দেব’। এতে কফেল ক্ষিপ্ত হয়ে পাহারারত দুই বন্ধুকে ডেকে এনে তিন জন মিলে মেয়েটিকে মাটিতে ফেলে বুকে চেপে বসে ও মুখ চাপা দিয়ে হত্যার পর জাম গাছে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনার পর ফজরের সময় কফেল ওজু-গোসল ছাড়াই আযান দেয়। ভোরের দিকে লাশ ঝুলে থাকার খবর ছড়িয়ে পরলে লোকজন আসতে থাকে। এ সুযোগে কফেল পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরে নিহতের বাবার দায়ের করা মামলা তদন্তকালে পুলিশ সহযোগী আসামী মাহফুজুর রহমান ওরফে ইছামুদ্দিনকে গ্রেপ্তার ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরন করলে সে নিজের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে ১৬৪ধারায় জবান বন্দি দেয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গফরগাঁও সার্কেল) আলী হায়দার চৌধুরী ময়মনসিংহ লাইভকে বলেন, ঘটনার সাত দিনের মাথায় আমরা প্রধান আসামী কফেলসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অপর আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভিকটিমের পরিবার সুবিচার পাবেন।