মৌলভীবাজারের রাজনগরের চা বাগান গুলোতে কোন ধরণের সুরক্ষা ছাড়াই চা শ্রমিকরা পাতা চয়নের কাজ অব্যাহত রেখেছে। শ্রমিকরা মাক্স, সাবান ও স্যানিটাইজার ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে কাজ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে তাদের মধ্যে সচেতনতামুলক কোন প্রচার প্রচারণা নেই।
সরকার করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ দোকানপাট ও গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত যেখানে কার্যকর করেছে। সেখানে চা শিল্পের নিপুঁন কারিগরদের কাজ বন্ধ রাখছে না কোম্পানি গুলো। করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাব টেকাতে সরকার একাধিক ব্যাক্তির সমাগম নিষেধ করেছে, সেখানে দল বেধেঁ শ্রমিকরা কোন ধরণের সুরক্ষা ছাড়াই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কর্ম ক্ষেত্রে নাকে মাক্স নেই সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার কোন ব্যবস্থা নেই।
গতকাল দুপুরে জেলার রাজনগর মাথিউড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা যায় নারী চা-শ্রমিকরা দল বেধেঁ চা পাতা চয়নের কাজ করে যাচ্ছেন। পাতা সংগ্রহ করে ওজন করার স্থানে এসে ওজন দিচ্ছেন।
এ সময় কথা হয় নারী চা-শ্রমিক নেত্রী লীলাবতীর সাথে তিনি বলেন সারা দেশ বন্ধ আমাদের মালিক বন্ধ দিচ্ছে না। সরকার বলছে এক জন থেকে আরেক জন তিন হাত দুরে থাকতে আর অমরা কাছাকাছি থেকে দল বেধেঁ কাজ করছি। আমরা কতনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। আমরা নিরাপদ থাকার জন্য স্ব-বেতনে রেশনসহ ছুটি চাই।
নারী পঞ্চায়েত সভাপতি আছিয়া বেগম মাথিউড়া চা-বাগানের ২৬ নং সেকশনে কর্মরত অবস্থায় বলেন; বিশ্বব্যাপি মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য দেশের মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করছে সরকার। আর আমাদের মালিক পক্ষ ছুটি দিচ্ছে না। আমাদের হাত ধোয়া নেই, নাকে মাক্স নেই, স্যানিটাইজার নেই, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নেই এবং আমাদের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতামুলক কোন প্রচারণা নেই। চা-শ্রমিক তুলছাম্মা বলেন আমাদের ছুটির দরকার। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমরা ঘরে থাকার দরকার।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশন নেতা সত্যনাইডু বলেন; করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চা শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হচ্ছে না। শ্রমিকদের সচেতন না করে কোন সুরক্ষা ছাড়াই তাদের মাধ্যমে বাগানের কাজ আদায় করা হচ্ছে। তিনি বিগত সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন শ্রমিকরা যে কোন ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তা দ্রæত ছড়িয়ে পড়ার ইতিহাস আছে। এখন সর্দি জ্বর ও কাশি হলে ভয় আতংকে শ্রমিকরা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছে না।
মাথিউড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক ওয়াহিদ্জুামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন; মালিক পক্ষের নির্দেশ ছাড়া বাগান ছুটি দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য আমরা সাবান মাক্সের ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। মাথিউড়া বাগানের নিয়মিত ৬৩৪ জন শ্রমিকের মাঝে তা বিতরণ করা হবে।