বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রস অ্যাডানম গেব্রেয়েসাস ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘‘আমরা শুধু একটি মহামারির বিরুদ্ধে লড়ছি না, আমরা ইনফোডেমিক-এর বিরুদ্ধে লড়ছি।”
করোনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি অনলাইনে ও অফলাইনে ছড়িয়ে পড়া ভুয়া তথ্য ও খবর সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক করতে চেয়েছেন।
তারও দুই সপ্তাহে আগে ডাব্লিউএইচও করোনা ভাইরাসকে ‘একটি বিশাল ইনফোডেমিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। তারা বলেছিল, করোনা ভাইরাস নিয়ে ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত তথ্য’ ছড়িয়ে পড়ছে, যার কিছু সঠিক আর কিছু ঠিক নয়।
ডাব্লিউএইচওর মহাপরিচালক মিউনিখে আরও বলেছিলেন, ভুয়া খবর করোনা ভাইরাসের চেয়ে দ্রুত ও সহজে ছড়িয়ে পড়ছে, যা বিপজ্জনক। তিনি মনে করেন, বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রমাণ দিয়ে নীতি নির্ধারণের এটিই সবচেয়ে ভালো সময়।
ডাচ সাইবার সিকিউরিটি কোম্পানি সাইবারস্প্রিন্ট বলছে, প্রায় ২২ হাজার নিবন্ধিত ওয়েবসাইটে ‘কোভিড-১৯’ অথবা ‘করোনা’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই কমবেশি ভুয়া।
এদিকে, ভুয়া খবর ঠেকাতে ডাব্লিউএইচও ফেসবুক, গুগল, টুইটার, টিকটক, ইউটিউবের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানান সংস্থার মহাপরিচালক গেব্রেয়েসাস। ফলে এসব মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এখন ফেসবুক, ইউটিউব খুললে তাদের করোনা ভাইরাস নিয়ে সঠিক তথ্য দিতে ডাব্লিউএইচওর ওয়েবসাইটে যাওয়ার পথ দেখানো হচ্ছে।
ঐ ওয়েবসাইটে করোনা নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ভুয়া তথ্য, মিথ ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে। যেমন অ্যালকোহল ও ক্লোরিন ইতিমধ্য়ে শরীরে ঢুকে যাওয়া ভাইরাস মারতে পারে না, গরম পানি দিয়ে গোসল করে কোভিড-১৯ এর সঙ্গে লড়া যায় না, ঠাণ্ডা পানি করোনা মারতে পারে না, আলট্রাভায়োলেট রশ্মি দিয়ে হাত জীবাণুনাশক করা যায় না – এসব তথ্য জানানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
করোনার কারণে সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৫৫৮ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় তিন লাখ ৮১ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে কোভিড-১৯ এর মতো মহামারি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ডাব্লিউএইচও। এর সঙ্গে ইনফোডেমিক বা তথ্য মহামারি যোগ হওয়ায় পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। ডয়চে ভেলে।