সাগরে হারিয়ে গিয়েছিলো ইন্দোনেশিয়ার এক কিশোর। ৪৯ দিন পর তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিভাবে সাগরে এতোদিন টিকে ছিলো এই কিশোর?
১৮ বছর বয়সী এই কিশোরের নাম আলদির মতে, এমন অনেক মুহূর্ত এসেছে এই ৪৯ দিনে তখন তার কাছে মনে হয়েছে জীবনের এই বুঝি অবসান ঘটে গেলো।
“আমি ভাবিনি যে কখনো আর ফিরে আসতে পারবো। কিংবা বাবা মাকে আবার দেখতে পাবো। কখনো কখনো মাথায় আত্মহত্যার চিন্তাও এসেছে।”
এটিই আলদি’র সাগরে হারিয়ে যাওয়া ও এরপর কাঠের ভেলায় ভেসে থাকার পর বিস্ময়করভাবে উদ্ধার পাওয়ার গল্প।
কাঠের ভেলার ওপর বানানো মাছ ধরার একটি ফাঁদ স্থানীয়ভাবে যার নাম রমপং এবং সেখানেই কাজ করতো ইন্দোনেশিয়ার এই কিশোর।
“একজন বার্জের সাথে সংযোগ রশিটি ধরে রাখতো। আরো তিনটি রশি দিয়ে ভেলাটিকে নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে রাখা হতো।”
এই কিশোর যেই ভেলাটিতে ছিলো তার অবস্থান ছিলো ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপের উপকূল থেকে ১২৫ কিলোমিটার দুরে।
সে এটি চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো তার মূল অবস্থান থেকে প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার দুরে।
“বেঁচে থাকার জন্য আমি মাছ ধরেছি। কাঁচা কিংবা সেদ্ধ যেভাবে পারি খেয়েছি। সবই খেয়েছি সাগরে ভেসে থাকার সময়।”
সবসময় কান্না করতেন আলদি।
“মা-বাবা, ভাই-বোনের কথা ভাবতাম। এরপর শুধু কাঁদতাম। প্রার্থনা করতাম, বাইবেল পড়তাম। ওই ভেলায় সাথে একটা বাইবেল আমি রাখতাম”।
আলদিকে উদ্ধার করে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ। যদিও আরো অনেকগুলো নৌকা তাকে পাশ কাটিয়ে চলে গেছে।
“আমি তাদের সাহায্য চাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।”
উদ্ধারের পর বাবার সাথে ফোনে কথা বলি।
“তখন কিছুই বলতে পারিনি আমি। শুধু কেদেঁছি।”
যদিও সাগরে প্রতিকূল অবস্থা থেকে উদ্ধারের ঘটনা এবারই তার প্রথম নয়।
কাজের জন্যই এর আগেও অন্তত তিন দফায় সাগরে এভাবে আটকা পড়েছিলো সে।
“উদ্ধার হওয়ার পর আমি দারুণ খুশি। আমি আর সাগরে কাজ করতে চাই না।”