বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি। সিরিজে ভালো পারফরমেন্স করার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ, এমনটা বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জানান স্বাগতিক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তবে সিরিজের প্রথম টেস্টে নিজের খেলা নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘হাত এখন আলহামদুলিল্লাহ পুরোপুরি ভালো। ইনজুরি থেকে ফিরে শুরুতে ওয়ানডে পেলে ভালো হতো। মাত্রই সুস্থ হয়ে পাঁচ দিন খেলাটা কতটা চ্যালেঞ্জের হবে এটা আমরা সবাই জানি। এই কারণে এখনো একটু হলেও সন্দেহ আছে যে, ওই অবস্থানে আমি এখনো পৌঁছতে পেরেছি কি-না। কারণ আমি মাত্র চারটি সেশন ট্রেনিং করেছি। এর ভেতরে দু’টি সেশন ছিল ঐচ্ছিক। আমার খেলার ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
২০০৯ সালের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে কাল থেকে শুরু হওয়া সিরিজে ভালো পারফরমেন্স করার ব্যাপারে আশাবাদি সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমি তো আশাবাদী। আমি মনে করি পুরো দলও বিশ্বাস করে ওদের সাথে ভালো করা সম্ভব। ভালো করার বিশ্বাসটা সেটা সবার ভেতরে আছে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে আমরা ভালো করতে পারব।’
আইসিসি টেস্ট র্যাংকিং-এর অষ্টম স্থানে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নবমস্থানে বাংলাদেশ। তবে দু’দলের মধ্যে রেটিং ব্যবধান ১৫। সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে যাওয়া সম্ভব নয়। তবে দু’দলের র্যাংকিং কাছাকাছি থাকায় জমজমাট লড়াই হবে বলে মনে করেন সাকিব, ‘আমাদের (দুই দলের) যেহেতু র্যাংকিংয়ের পজিশনটা খুব কাছাকাছি, তাই স্বাভাবিকভাবেই লড়াইটা জমবে।’
চলতি বছরের জুলাইয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিলো বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু ঐ সিরিজে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স করেছে বাংলাদেশ। হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা। সাকিবের নেতৃত্বে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। নিজেদের কন্ডিশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সুবিধা নিয়েছে, এবার নিজেদের কন্ডিশনের সুবিধা নিতে চান সাকিব, ‘ওরা যেমন ওদের হোমে ভালো করতে পেরেছে, আমাদেরও লক্ষ্য থাকবে আমরা যেন ওরকমই ভালো করি এখানে।’
চলমান বছর টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও ডান-হাতি অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। তাইজুল ৫ ম্যাচে ৩৩টি ও মিরাজ ৬ ম্যাচে ২৬ উইকেট শিকার করেছেন। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজেও তাইজুল-মিরাজের উপর আস্থা রাখছেন সাকিব, ‘তাইজুল-মিরাজ ইতোমধ্যে অনেক ম্যাচ খেলে ফেলেছে এবং বেশ অভিজ্ঞও ওরা এখন। ওদের নামের পাশে অনেক উইকেটও আছে। ওরা এখন যথেষ্ট অভিজ্ঞ ও সেই সামর্থ্যও আছে, যে কোন একজনই হয়তো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। তাইজুল খুবই ভালো বল করেছে, অনেক গুলো উইকেট পেয়েছে। মিরাজও অনেক সুন্দর বোলিং করছে।’
তাইজুল-মিরাজের সাথে স্কোয়াডে থাকা আরেক তরুন স্পিনার নাঈম হাসানের কথাও উল্লেখ করেন সাকিব। তাইজুল-মিরাজের সাথে নাইম ও তার নিজের উপস্থিতিতে দলের স্পিন বিভাগ নিয়ে চিন্তিত নন সাকিব। তিনি বলেন, ‘এছাড়া নাঈমও আছে, আমার কাছে মনে হয়- সে অনেক সম্ভাবনাময়। আমার কাছে মনে হয়, আমাদের স্পিন আক্রমণ নিয়ে খুব বেশি টেনশন করার মত জায়গা নেই, কারণ সবাই যেহেতু খুবই অ্যাটাকিং বোলার ও উইকেট শিকারী বোলারই বলব আমি। যারা আছে সবাই আক্রমণাত্মক বোলিং করতে পারে।’
আর মাত্র ৪ উইকেট পেলেই টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে ২শ’ উইকেট শিকার করবেন সাকিব। তাই নতুন মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে কি ভাবছেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘এটা তো তেমন কিছু না। কয়েকটা টেস্ট খেললে তো দুইশ’ টেস্ট উইকেট হয়েই যাবে। এটা খুব বড় ব্যাপার না। হয়ে যাওয়ার পরে হয়তো আনন্দ বাড়তে পারে।’