নেত্রকোণার দুর্গাপুরে গত ৪ ফেব্রুয়ারী থেকে ৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ৫ দিনে তিন অগ্নিকান্ডে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ১৫ পরিবার। এর মাঝে ৪ ফেব্রুয়ারী মধ্য রাতে পৌর শহরের মধ্য বাজারে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে পুড়ে যায় ৯ টি কাপুড়ের দোকান সহ ৩টি বসবাড়ি। এই দিন সন্ধ্যায় উপজেলার বিরিশিরিতে করনিয়া গ্রামে চুলার থেকে আগুন লেগে পুড়ে ৩টি ঘর। সর্বশেষ পৌর শহরের এমপির মোড়ে ইরাক ভেটেরিনারী ঔষধের দোকানে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনে ১ টি ঔষধের দোকান সহ ৩ টি ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। তিনটি ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও ক্ষয়ক্ষতির হয়েছে প্রায় কয়েক কোটি টাকা। এর মাঝে দুইটি অগ্নিকান্ডেই ঘটেচ্ছে বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে।
ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের কোল ঘেঁষে নেমে আসা সুমেশ্বরী নদী । নীল জলরাশির এই স্রোতধারা নদীর দুই পাশেই গড়ে উঠেছে জনবসতি। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকার মানুষ দুর্গাপুর বাজারের উপর নির্ভরশীল । কিন্তু নদী তীরবর্তী বাজার হয়েও অনেক সময় পানি অভাবে আগুন নেভাতে গিয়ে হিমসিম পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের।
স্থানীয়রা জানায়, আগের চৈত মাসেও সোমেশ্বরী নদীতে পানি ছিল । কিন্তু বর্তমানে বালু ব্যবসায়ীদের যত্রতত্র অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর মধ্য দিয়ে ডাইভারশন করায় গতি হারিয়েছে নদী। আর পৌর শহরের ভিতরের পুকুর ভরা করার পর্যাপ্ত পানি না অভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয় বলে অভিযোগ ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। তাই দ্রুতই বালু ব্যবসায়ীদের যত্রতত্র বালু উত্তোলন বন্ধ করা দাবি সকলের।
সংবাদকর্মী এস এম রফিকুল ইসলাম জানায়, দুর্গাপুর গুরুত্বপূর্ণ এই একটি উপজেলা। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই উপজেলা বেশ নাম রয়েছে। পাশ্ববর্তী উপজেলা কলমাকান্দাও ফায়ার সার্ভিসের ২টি গাড়ি আছে। কিন্তু দুর্গাপুরের অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের একটি মাত্র পানির গাড়ি রয়েছে যা দিয়ে তারা দুর্ঘটনার সময় ব্যবহার করে আবার অগ্নিনির্বাপণের কাজে ব্যবহার করে । আমরা দাবি জানাচ্ছি অচিরেই দুর্গাপুর ফায়ার সার্ভিস কে প্রথম শ্রেণীর ফায়ার সার্ভিসে উন্নত করা হোক ।
নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ পরিচালক আবু আব্দুল্লাহ জানায়, শহরের ভিতরে যতগুলো পুকুর রয়েছে সব কিছুই আজ শুকিয়ে গিয়েছে । অনেকে আবার এইসব পুকুর দখল করে বাড়ি ঘর নির্মাণ করছে । এর ফলে আমাদের এই আগুন নিভাতে কিছুটা বেগ পেতে হয়ে। যদি পুরো শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ওয়াটার ডিজাইনার স্থাপন করা হয় তাহলে আমরা সহজেই ওইখান থেকে পানি নিয়ে ব্যবহার করতে পারবো। পাশাপাশি দুর্গাপুরে সকল ব্যবসায়ীদের আরো সচেতন হয়ে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখতে হবে ।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মানু মজুমদার জানান, আমি ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একটি তালিকা করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের কিছুটা আর্থিক সহায়তা করেছি এবং খুব দ্রুতই তাদের জন্য সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা ব্যবস্থা করা হচ্ছে ।