সংবাদপত্রের কাছে সজাগ দৃষ্টি প্রত্যাশা করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সাথে বৈঠক করার পর সংবাদিকদের এসব কথা বলেন জোটের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন সরকারের কর্মকাণ্ডের দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে এবং সহযোগিতা করতে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য যেসব সহযোগিতা দরকার, তার সবই সম্পাদকদের কাছে চাওয়া হয়েছে।
এই বৈঠকে সম্পাদকদের মধ্যে ছিলেন ‘নিউজ টুডে’র রিয়াজ আহমেদ, ‘প্রথম আলো’র মতিউর রহমান, ‘মানবজমিন’–এর মতিউর রহমান চৌধুরী, ‘নিউ এজ’–এর নুরুল কবীর, ‘ঢাকা ট্রিবিউন’–এর র জাফর সোবহান, ‘আমাদের নতুন সময়’–এর নাঈমুল ইসলাম খান, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ২৪ডটকম–এর তৌফিক ইমরোজ খালিদী, ‘সাপ্তাহিক’ –এর সম্পাদক গোলাম মর্তুজা প্রমুখ।
বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিকেল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টি পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সম্পাদকদের সাথে বৈঠক হয়েছে। এটি একটি মূল্যবান সভা ছিল। কেননা তারা (সম্পাদকেরা) বিভিন্ন ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন। আমাদেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের কাছ থেকে তারা কী আশা করেন, তা জানতে চেয়েছেন।’
গণফোরামের সভাপতি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের যেমন কর্তব্য আছে, আমরা যারা বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি আছি, যারা নির্বাচন করতে যাচ্ছি, তাদেরও কর্তব্য আছে। দলগুলোকে পরিবেশ রক্ষা করতে হবে যেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়।’ তিনি বলেন, ‘সম্পাদকদের সাথে আমাদের আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল অতীতের অভিজ্ঞতার আলোকে কী কী জিনিস দেখেছেন। সম্পাদকেরা মনে করেন এবার আমাদের (ঐক্যফ্রন্ট) বিরত থাকতে হবে, সবাইকে সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করতে হবে যেন জনগণ সত্যিকার অর্থে নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ড. কামাল বলেন, নির্বাচন সত্যিকার অর্থে অবাধ ও নিরপেক্ষ যেন হয় সেটাই তাদের লক্ষ্য। এটাকেই তারা সত্যিকার অর্থে মূল্যবান মনে করেন। ঐক্যফ্রন্টের সেই চেষ্টা থাকবে। তিনি বলেন, সরকারের আচরণের বিভিন্ন দিক তারা চিহ্নিত করেছেন। ঐক্যফ্রন্ট আশা করে সংবাদপত্র এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখবে।
ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
গত মঙ্গলবার মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে এক বৈঠক থেকে সম্পাদকদের সাথে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।