ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে পান ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হেলাল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী উত্তমকে আটক করতে হুজুর সেজে গ্রেপ্তার করেছিলেন ওসি মোখলেছুর রহমান। তার এ সফলতায় বৃহস্পতিবার ওসি মোখলেছুর রহমানকে জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে পৃরস্কৃত করা হয়।
পুলিশ জানায়, মাত্র ২০ হাজার টাকার জন্য গত ১৮ জানুয়ারি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাজিবপুর ইউনিয়নের বল্বব গ্রামের বাসিন্দা পান ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এদিকে নিহত হেলালের স্ত্রী মাজেদা খাতুন তার স্বামী নিখোঁজ মর্মে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির সূত্র ধরেই হেলাল হত্যায় জড়িত নয়জনকে আটক করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোখলেছুর রহমান জানান, জিডির সূত্র ধরে আক্কাস ওরফে আকাশ নামে একজনকে আটক করা হয়। আটক আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ১৮ জানুয়ারি হেলাল উদ্দিন পান বিক্রি করে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি যাওয়ার পর রাত দেড়টার দিকে হেলালের মুখ চাপা দিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় হত্যাকারীরা।
এরপর পরিকল্পিতভাবে হেলালকে হত্যার পর লাশ একটি টয়লেটের সেফটি ট্যাংকে ফেলে দেয়। এরপর মাটিচাপা দিয়ে লাশ ঢেকে রাখে। গত ১৮ জানুয়ারি টয়লেটের ভেতর মাটিচাপা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৌশলে খুনের রহস্য উন্মোচন করা হয়।
ওসি জানান, আকাশকে আটকের পর তাকে কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ফারুক নামে জড়িত আরেকজনের নাম বলে দেয়। ফারুক জানায়, রিপন নামে আরেকজন জড়িত। রিপনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে জানায়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী উত্তম নামে একজন। সে সিলেটে অবস্থান করছে। ওসি মোখলেছুর রহমান হুজুর সেজে টিম নিয়ে সিলেটে অভিযান চালান।
ওসির সফল অভিযানে গ্রেপ্তার হয় উত্তম। উত্তম পুলিশের কাছে স্বীকার করে জানিয়েছে, এ হত্যায় ফারুক, রুবেল, কাঞ্চন, আমিন, এনামুল, আকাশ, শামছুল, সোহেলসহ আরো অনেকেই জড়িত।
ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার। সকালে মাসিক অপরাধ সভায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য ইশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোকলেছুর রহমানকে রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ শ্রেষ্ঠ ওসির পুরস্কার তুলে দেন।