যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে গ্রেপ্তারসংক্রান্ত ঘটনায় একটি সংবাদ প্রকাশের কারণে দৈনিক ‘মানবজমিন’-এর সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে দায়ের করা মামলায় সম্পাদক পরিষদ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।
সম্পাদক পরিষদের পক্ষে সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আজ বুধবার এই দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মাগুরা-১ আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর এই মামলা দায়ের করেছেন। মানহানির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কিন্তু ওই সংবাদে সাইফুজ্জামান শিখরের নাম উল্লেখ করা হয়নি এবং প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাঁর সঙ্গে কোনো যোগসূত্রের বিষয় সেখানে উল্লেখ করা হয়নি।
বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ বলেছে, ওই সংবাদে কোনো অংশেই নাম বা সংশ্লিষ্ট কোনো যোগসূত্রের কথা উল্লেখ না থাকার পরও কেন সাংসদ সাইফুজ্জামান শিখর মামলা দায়ের করলেন, তা বোধগম্য নয়। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কোনো অজ্ঞাত ব্যবহারকারী যদি কিছু করে থাকেন, তবে তার দায় কোনোভাবেই দৈনিক ‘মানবজমিন’-এর সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও এর প্রতিবেদকদের ওপর বর্তায় না।
সম্পাদক পরিষদ মনে করে, এই মামলা দায়ের করার মধ্য দিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ভীতি প্রদর্শন এবং হয়রানি করার অপচেষ্টা চলছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের এমন ব্যবহারের কারণেই সম্পাদক পরিষদ আইনটির বাস্তবায়ন শুরুর আগ থেকেই এ রকম আইনের বিরোধিতা করে আসছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্বেগ
‘মানবজমিন’ পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাউথ এশিয়া ক্যাম্পেইনার সাদ হাম্মাদি একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘এই মামলাবিষয়ক পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া এবং অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, মানহানির মামলা ফৌজদারি কার্যবিধি থেকে বাদ দেওয়া উচিত বাংলাদেশের এবং আইনটি পর্যালোচনা করে তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করা প্রয়োজন।