শেরপুরে জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারী মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত ৩০ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জন মহিলা, ৮ জন শিশু, বাকীরা প্রাপ্তবয়স্ক।
জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম। জেলা প্রশাসক সভাকক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ছোট্ট একটি জেলা শেরপুর। যার লোকসংখ্যা ১৭ লাখ। সেখানে প্রতিমাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের হাতে ইজিবাইক তুলে দেওয়া হচ্ছে।
জেলা শহরের খোয়ার পাড় মোড়ের একটি সড়ক দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ইজিবাইক চাপায় নিহত হওয়ার পর পুলিশ যে চালককে আটক করে তার বয়স ১২-১৩। এখন প্রশ্ন হচ্ছে একে গাড়ী চালানোর অনুমতি দিচ্ছে কারা।
ঝিনাইগাতী উপজেলার তিনআনী বাজারের একটি সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়, সেখানে ট্রাকের নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যান একজন রিকশা চালক।
পরে দেখা গেল ওই ট্রাক চালাচ্ছিল একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হেলপার। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, মানুষ হিসেবে আমি যত বড় অবস্থানেই থাকি না কেন, যে মানুষ খেটে খান আমার জীবনের দাম আর ওই মানুষের জীবনের দাম একই। আমরা মৃত্যু দিয়ে প্রমাণ করি আমাদের কিছু একটা করতে হবে। কেউ ভাবি না, একজন কর্মক্ষম মানুষ মারা গেলে তার পরিবার কতটা ড্যামেজ হয়। যাদের মারা গেছে তারাই শুধু বুঝতে পারে।
এজন্য তিনি যত্রতত্র লাইসেন্স প্রদান, পরিবহনে চাঁদাবাজী, অযোগ্য লোককে লাইসেন্স প্রদানকে দায়ী করেন। এ ব্যাপারে তিনি লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে লাইসেন্স দেওয়ার সময় সতর্ক হওয়ার আহবান জানান। ন্যাশনাল আইডি দেখাতে না পারলে কাউকে লাইসেন্স না দেওয়ার জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ ও বিআরটিএ কে তিনি অনুরোধ করেন।
তার এবক্তব্য কে সমর্থন করে সভার সভাপতি জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, জেলার বিভিন্নস্থানে প্রকাশ্যে সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে টোল আদায়ের নামে চাঁদা তোলা হচ্ছে। এসব কাজ আইন বিরোধী।
শেরপুরকে পর্যটনের জেলা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, বাইরের জেলা থেকে এসে এসব কর্মকান্ড দেখলে শেরপুরের মর্যাদা নষ্ট হয়। তাই এসব বন্ধ না করলে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সভায় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, মুজিববর্ষে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, আগামী ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত মুজিববর্ষ চলবে। তাই সারা বছর যেন উৎসাহ ও উদ্দীপনা ও বর্ণাঢ্য আয়োজনে বছরটি পালিত হয় সেজন্য সরকারী-বেসরকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে কর্মসূচী নিতে হবে।
আমরা জাতির পিতাকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে যা যা করা দরকার তাই করব। সভায় ৫ উপজেলার চেয়ারম্যান, ইউএনও, পৌর মেয়র, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।