বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজে একমাত্র টেস্টে মুমিনুল হকের নেতৃত্বে ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। সিলেটে তিন ম্যাচে ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চমবারের মতো হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ নিয়েছে বাংলাদেশ। যার চারটিই ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বে।
প্রতিটি ওয়ানডেতে তিন শ’র ওপরে রান হয়েছে। ২১ বছরের রেকর্ড ভেঙে চারটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি হয়েছে রেকর্ডের ছড়াছড়ি। বিশ্বমঞ্চে ওপেনিং জুটিতে তৃতীয় শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে তামিম-লিটন জুটি। এবার পালা টি-২০ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের। মিরপুর শেরেবাংলায় বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে দুই ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথমটি শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৬টায়।
প্রতিপক্ষ, র্যাঙ্কিং, শক্তিমত্তা, অভিজ্ঞতা ও বর্তমান পারফরম্যান্স- সব কিছুতেই বাংলাদেশ এগিয়ে। ওয়ানডেতে শেষ ১৬ ম্যাচে জিম্বাবুয়ে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। ওয়ানডের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-২০ নিয়মিত খেলা হয় না বাংলাদেশের। এবার পাঁচটি টি-২০ খেলার কথা ছিল। কিন্তু সূচি পরিবর্তন করে তিন ওয়ানডে যুক্ত করা হয়েছে। টি-২০ করা হয়েছে দু’টি।
দুই দল এখন পর্যন্ত টি-২০ খেলেছে ১১টি। জিম্বাবুয়ে জিতেছে চারটিতে। বাকিগুলোতে জয় বাংলাদেশের। শেষ দুই ম্যাচেও জিতেছে স্বাগতিকরা।
সিরিজ জিতলেই আইসিসি টি-২০ র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হবে টাইগারদের। এক ধাপ এগিয়ে নবম স্থানে উঠবে। বর্তমানে ২২৬ রেটিং নিয়ে দশম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। নবমে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও রেটিং ২২৬। তবে ভগ্নাংশের হিসাবে এগিয়ে নবম স্থানে ক্যারিবীয়রা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১-০ বা ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলে বাংলাদেশের রেটিং হবে ২২৭। তবে সিরিজ ড্র হলে দশম স্থানেই থাকতে হবে বাংলাদেশকে। তখন রেটিং কমে হবে ২২৩। আর ২-০ ব্যবধানে হারলে রেটিং হবে ২২০।
টি-২০তে একজন ব্যাটসম্যানকে কতটা চ্যালেঞ্জ নিয়ে খেলতে হয়, খুব ভালো করেই জানেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সুস্থির একটা ব্যাটিং অর্ডার চান, যেখানে একজন ব্যাটসম্যান আগে থেকেই জানবেন তার ভূমিকা। একই সাথে সুযোগ পাওয়া ক্রিকেটারকে দিতে চান নিজেকে প্রমাণের যথেষ্ট সুযোগ। ওয়ানডেতে যারা যথেষ্ট ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকেও অবদান রাখতে বললেন টি-২০তে।
টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পথচলা শুরু ২০০৬ সালের নভেম্বরে। প্রথম সেঞ্চুরি এসেছে ২০১৬ সালে, তামিমের ব্যাটে। টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের ধর্মশালায় প্রাথমিক পর্বের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ১০৩ রান। প্রথম সেঞ্চুরির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল প্রায় এক দশক। দ্বিতীয়টির অপেক্ষা চলছে চার বছর ধরে। ১৪ বছরে ৯৪ ম্যাচে বাংলাদেশের সেঞ্চুরি ওই একটিই। গত বছর ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও ৮১ রানে থেমেছিলেন তরুণ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ নাঈম শেখ। মাহমুদুল্লাহ মনে করেন এবার তামিমের হাত ধরেই আসবে টি-২০এর আরো একটি সেঞ্চুরি, ‘তামিম যদি ওর মতো ব্যাটিং করতে পারে, তাহলে এই সিরিজে একটা সেঞ্চুরি করতে পারবে।’
ব্যাটিং অর্ডারে হুটহাট পরিবর্তন ক্রিকেটের নিয়মিত চিত্রের একটি। তামিম ইকবাল ছাড়া দেশের সব ব্যাটসম্যানেরই বিভিন্ন পজিশনে ব্যাট করতে হয়। খুব কম ব্যাটসম্যানেরই স্থির একটি ব্যাটিং পজিশন আছে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টি-২০এর আগে অধিনায়ক জানালেন, ‘ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলতে হবে। একটা জিনিস নিশ্চিত করতে চাই, যে যেখানে ব্যাটিং করুক সে সুস্থিরভাবে খোলা মন নিয়ে যেন পারফর্ম করতে পারে এবং ব্যাটিংটা যেন সে উপভোগ করে। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ম্যাচে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের প্রয়ই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। স্রেফ পরিসংখ্যান না দেখে ম্যাচের পরিস্থিতি দেখে ব্যাট করতে হবে। বিশ্বাসটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যে যেখানেই ব্যাটিং করুক সেটা তিন, চার, পাঁচ, ছয় কিংবা সাত হোক তারা যেন তাদের নির্দিষ্ট ভূমিকা অনুযায়ী ব্যাটিং করতে পারে। আশা করছি এ জিনিসগুলো বিবেচনা করলে টিম ম্যানেজমেন্টও সাপোর্ট করবে।’
ওইদিকে জয়ের জন্য মরিয়া জিম্বাবুয়ে। টেস্ট, ওয়ানডে থেকে টি-২০তে এগিয়ে তারা। শন উইলিয়ামস জানিয়েদিলেন, ‘সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে আমরা শক্তিশালী। অপেক্ষা করছি নির্দিষ্ট দিন ও সময়ের ওপর। ছোট ছোট অবদানে আমাদের দিকেই হেলতে পারে ম্যাচ। আগের সংস্করণে পরাজয়গুলো মনে রাখতে চাচ্ছে না কেউ। এখান থেকেই ভিন্ন চিত্র লিখব আমরা।’