প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) সাবেক মহাপরিচালক ও খ্যাতনামা সাংবাদিক শাহ আলমগীরের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছর এদিন তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন চাঁদের হাট, অগ্রদূত নিকেতন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল, প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, শোকর্যালি ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়া বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
শাহ আলমগীর পিআইবিতে যোগ দেওয়ার আগে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে। বাবার চাকরির সুবাদে তার জীবনের বড় একটি অংশ কেটেছে বৃহত্তর ময়মনসিংহে। তিনি ময়মনসিংহের গৌরীপুর কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এছাড়াও তিনি মস্কো ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম থেকে সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা ও থমসন ফাউন্ডেশন পরিচালিত সাংবাদিকতায় উচ্চতর কোর্স সম্পন্ন করেছেন।
যোগ দিয়েছেন করাচিতে সাউথ এশিয়ান ফ্রি মিডিয়া আয়োজিত ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিষয়ক কর্মশালা, ফিল্ম আর্কাইভস আয়োজিত ফিল্ম অ্যাপ্রিশিয়েসন কোর্স ও ভারতের গোয়ায় ইউএনডিপি আয়োজিত ‘সাউথ এশিয়ান মিডিয়া অ্যান্ড ইটস রোল ইন এটেইনিং দ্য মিলিনিয়াম ডেভেলপমন্ট গোল’ শীর্ষক সম্পাদকদের কর্মশালায়।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমগীর সাংবাদিকতা পেশার শুরু ছাত্রজীবন থেকেই। উপমহাদেশের প্রথম শিশু-কিশোর সাপ্তাহিক ‘কিশোর বাংলা’ পত্রিকায় যোগদানের মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন। এখানে তিনি সহসম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন ১৯৮০ থেকে ‘৮৪ সাল পর্যন্ত। ২০১৩ সালের ৭ জুলাই তিনি পিআইবির মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি প্রথম আলো, সংবাদ, জনতা, বাংলার বাণী, আজাদ, যমুনা টেলিভিশন, চ্যানেল আই, একুশে টেলিভিশন, মাছরাঙা টেলিভিশন ও এশিয়ান টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন।
শাহ আলমগীর শিশুকল্যাণ পরিষদ এবং শিশু ও কিশোরদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান ‘চাঁদের হাট’-এর সভাপতি এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০০৬ সালে ‘কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ সাহিত্য পুরস্কার’, ২০০৫ সালে ‘চন্দ্রাবতী স্বর্ণপদক’, ২০০৪ সালে ‘রোটারি ঢাকা সাউথ ভোকেশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ ও ২০০৪ সালে ‘কুমিল্লা যুব সমিতি অ্যাওয়ার্ড’ পান।
পারিবারিক জীবনে তিনি এক ছেলে ও মেয়ে সন্তানের জনক ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম ফৌজিয়া বেগম। ছেলে আশিকুল আলম দীপ ও মেয়ে অর্চি অনন্যা।