জয়পুরহাট শহরের আরামনগর মহল্লায় ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ হয়ে মা, ছেলেসহ একই পরিবারের আটজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের তিনজন সদস্য নিহত হন। আহত হন আরো ৫ জন। পরে হাসপাতালে আরো চারজনের মৃত্যু হয়। বেঁচে থাকা সর্বশেষ সদস্য দুলাল হোসেন (৬৫) আজ বৃহস্পতিবার সকালে মারা যান। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় তিনিও গুরুতর দগ্ধ হয়েছিলেন।
জয়পুরহাট ফায়ার স্টেশনের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জয়পুরহাট শহীদ জিয়া ডিগ্রি কলেজের কাছে শহরের আরামনগর এলাকায় দুলাল হোসেনের আধা পাকা বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুলালের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৬০) তাদের ছেলে আব্দুল মুমিন (৩৫) ও মুমিনের মেয়ে জেএসসি পরীক্ষার্থী বৃষ্টির (১৪) পোড়া লাশ উদ্ধার করে।
পরে দুলাল হোসেন (৬৫), মোমিনের স্ত্রী পরি বেগম (৩০), তাদের অন্য দুই যমজ মেয়ে হাসি ও খুশি (১০) এবং ছেলে আব্দুর নূরকে (৬) আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঠানো হয় জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে।
সেখান থেকে আহত ওই পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নেয়ার পথে ভোরের দিকে দুলাল ছাড়া বাকি চারজনের মৃত্যু হয় বলে জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান জানান। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বেঁচে থাকা সর্বশেষ সদস্য দুলাল হোসেন (৬৫) মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি বলেন, রাতে মোমেনা বাসার রাইস কুকারে রান্না করার সময় বৈদ্যুতিক গোলযোগ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে তারা জানতে পেরেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন দেখে আমরা এগিয়ে গিয়ে জানালা ভেঙে একই পরিবারের আটজনের মধ্যে শিশুসহ পাঁচজনকে বের করে আনতে পারলেও ভয়বহ আগুনের কারণে বাকিদের বের করা সম্ভব হয়নি।
জয়পুরহাট ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। দেড় ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিভাতে সক্ষম হই। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ বিভাগ ঘটনার তদন্ত করবে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারীতে বাতাস ভারি হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান।