নিজস্ব সংবাদদাতা : জামালপুরে প্রায় ১০ বছর আগে মোবাইল ফোন নিয়ে বাক-বিতণ্ডার জেরে কিশোর শাহজামাল স্বাধীন হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে খালাস দিয়েছে হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি মুহম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এছাড়া মামলার প্রধান আসামি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শিশিরের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া আসামি হলেন জামালপুর সদরের কম্পপুর গ্রামের ফজলে রাব্বী শিশির। আর হাইকোর্টে খালাস পেয়েছেন জামালপুরের লিচুতলার সাদ্দাম, শেখের ভিটা এলাকার জাকির হোসেন, পিলখানা এলাকার মিরান ও সকাল বাজারের সেতু।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ।
রায়ের পর বশির উল্লাহ জানান, বয়স বিবেচনায় আসামি ফজলে রাব্বি শিশিরকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া বাকি চার আসামির বিরুদ্ধে মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে (এফআইআর) সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা ছিল না। নিম্ন আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারার পরিবর্তে ৩২৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়।
তিরি আরও জানান, অভিযোগ সংশোধন করে ৩০২ ধারায় আনা হলেও সে অনুযায়ী আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। অর্থাৎ, অভিযোগ গঠনে ৩০২ ধারার প্রতিফলন ঘটেনি। এসব বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্ট এ রায় দিয়েছে।
উল্লেখ্য, জামালপুর সদরের সকাল বাজার এলাকায় রশিদপুর কওমি মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্র শাহজামাল স্বাধীনকে (১৫) ২০১০ সালের ২৩ মার্চ রাতে হত্যা করা হয়। মামলার বিবরণে জানা যায়, শাহজামালের একটি মোবাইল ফোন তার বন্ধু সাদ্দাম নিয়ে যায় এবং ফেরত দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ওই পাঁচ কিশোর বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে শাহজামালকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ ঘটনায় শাহজামালের বাবা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে দশজনের সাক্ষ্য শুনে জামালপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। পাঁচ আসামির সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেন তিনি।