দূরের গ্রহ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে বিজ্ঞানিরা। এ নিয়ে একটি টেলিস্কোপ কক্ষপথ থেকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। দূরের গ্রহগুলি সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ করছে এই অভিযান।
পৃথিবীর বুকে টেলিস্কোপ নক্ষত্রের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে। কোনো গ্রহ সেটির নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করার সময় গ্রহের অভিকর্ষ নক্ষত্রকে আকর্ষণ করে। তখন নক্ষত্র কিছুটা নড়াচড়া করে। তথাকথিত এই রেডিয়াল মুভমেন্টের মাধ্যমে এক্সোপ্ল্যানেটের ভর পরিমাপ করা যায়।
দূরের এই সব মহাজাগতিক বস্তু কি বৃহস্পতি গ্রহের মতো গ্যাস দিয়ে তৈরি? নাকি পৃথিবী বা মঙ্গলগ্রহের মতো পাথর দিয়ে তৈরি? এই সব গ্রহ কি শুধু মহাসাগর বা বরফের চাদরে ঢাকা? এমন সব তথ্য জানতে পারলে বোঝা যাবে, কোনো গ্রহ বাসযোগ্য হতে পারে কিনা।
দূরের গ্রহগুলির নিজস্ব বায়ুমণ্ডল রয়েছে কিনা, স্যাটেলাইট সেই তথ্যও জানার চেষ্টা করছে। সেটা জানতে নক্ষত্রের কাছে গ্রহের কক্ষপথ ও গ্রহের উপর নক্ষত্রের আলোকপাত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আমাদের সৌরজগতের গ্রহগুলি যে সেগুলির বর্তমান অবস্থানে জন্মগ্রহণ করে নি, তা ইতোমধ্যেই জানা গেছে। প্রচলিত তত্ত্ব অনুযায়ী বিশাল মেঘের পুঞ্জ ঘনীভূত হলে এবং ঘূর্ণায়মান চাকতি সদ্য সৃষ্টি হওয়া নক্ষত্র প্রদক্ষিণ করলে গ্রহ সৃষ্টি হয়।
সূর্য থেকে অনেক দূরে বৃহস্পতির মতো বিশালাকার গ্যাসভিত্তিক গ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। চারপাশের পরিবেশের কারণে থমকে গেলে এমন গ্রহ সূর্যের আরও কাছে এগিয়ে যায়। ভিতরের অংশে, যেখানে ধূলিকণা ঘনীভূত হয়ে পাথুরে কাঠামোয় পরিণত হয়– গ্রহ সেদিকে ধাবিত হয়। বিকাশের সময় গ্রহগুলি অনেক দূরত্ব অতিক্রম করে। কিয়প্স স্যাটেলাইট সেই গতিপথ চিহ্নিত করতেও যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করবে।
এই স্যাটেলাইট এমনকি নতুন জগতও আবিষ্কার করতে পারে। হয়তো এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত এক্সোপ্ল্যানেটের তুলনায় ছোট গ্রহের অস্তিত্বের কথাও জানা যাবে। পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডলে ঢাকা পাথুরে গ্রহও খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আগামী দশকগুলিতে একাধিক সুপার টেলিস্কোপ এমন সব দূরের গ্রহগুলি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত গবেষণা চালাবে। তখন হয়তো মানবজাতির অন্যতম মৌলিক প্রশ্নের উত্তরের আভাস পাওয়া যাবে। পৃথিবীর বাইরে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কোনো প্রান্তে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে কিনা জানা যাবে। (সূত্র: ডয়সে ভেলে)