ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক : ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের দখলে আছে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার বনবিভাগের কয়েক কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি।
স্থানীয়রা জানান, ২০ জনেরও বেশি একটি ভূমিদস্যু চক্রের দখলে রয়েছে ১৬ একরেও অধিক জায়গা যা দীর্ঘদিনেও উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বনবিভাগ। সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ২নং জুগলী ইউনিয়নের জুগলী মৌজার কালাপাগলা বাজারের দাগ নং-১০০৫, ১০০৬, ১০০৯, ১০২২, ১০২৪, ১২০৭, ১২০৮, ১২০৯, ১২১০, ১২১১, ১২১২, ১২১৩, ১৫৪৭, ১৫৮৫, ১৬৬১, ১৬৬২, ১৬৬৩, ১৮৫৫, ৩১৮০ দাগের বনবিভাগের ১৬ একর জায়গার উপর গড়ে উঠেছে দোকানপাট ও বাড়িঘর। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের হাতে তা দখলে রয়েছে কয়েক যুগ ধরে।
স্থানীয়রা বলছে, বন বিভাগের পক্ষ থেকে কোন বাধা না থাকায় তারা ভোগ দখল করে আসছে। দখলকারীরা বনবিভাগের জমিতে বসবাসের পাশাপাশি দোকানপাট নির্মাণ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি। দখলকারীরা হলেন, জয়নাল আবেদিনের পুত্র নুরে আলম, সোহাগপুরের বাবর আলীর পুত্র আলী আকবর, নুর মোহাম্মদ মুন্সীর পুত্র এবাদুল্লা, কালাপাগলা গ্রামের তাহের উদ্দিনের পুত্র শরাফ উদ্দিন (৮ শতাংশ), মিয়া হোসেনের পুত্র ইমান আলী (২৫ শতাংশ), রেজ্জাক (৫০ শতাংশ), মোশারফ হোসেন (২০ শতাংশ), আমেনা খাতুন (২০ শতাংশ), হামিদুল (১৫ শতাংশ), আবু বাক্কার (১৫ শতাংশ), দুদু মিয়া, সাত্তার (১০ শতাংশ), মৃত সামাদ আলী ফকিরের চার পুত্র হরমুজ আলী, আহাম্মদ আলী, আয়ুব আলী, রুস্তম, ইঞ্জিন শেখের পুত্র হালিম, কেতুর বাপের পুত্ত রুস্তম (৮ শতাংশ), রশিদ, মৃত জমসের হোসেনের চার পুত্র ইলিয়াস, মুসা, আবু বকর, মোস্তাক, আব্দুল হালিম, জয়নাল আবেদিনের পুত্র আবু সালেহ (৩০ শতাংশ), আবু তাহের নুরুল্লার পুত্র মাসুদ বিল্লাহ (২৫ শতাংশ), আব্দুল গফুরের পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (৩০ শতাংশ), আঃ ছালামের পুত্র বিল্লাল হোসেন (৫ শতাংশ), জুগলীর ফজলুল হক, জয়নাল আবেদিনের পুত্র নুরে আলম, জয়মঙ্গলের মনসুর আলী, কালাপাগলার দানেশ আলীর পুত্র হাতেম আলী, জহর উদ্দিনের পুত্র তারা মিয়াসহ আরও অনেকেই। এদের মাঝে কেউ কেউ আবার বসতবাড়ি নির্মাণ করেছেন।
দখলকারীদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা জন্মের আগ থেকে বনবিভাগের জায়গায় ঘরবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসতেছি। বন বিভাগ কখনো বাধা দেয়নাই, তাই আমরাও জায়গা দখলে আছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বনবিভাগের দায়িত্বে থাকা বিট অফিসার মোঃ শাহ আলম বলেন, আমি ওই জায়গা পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে এই ভূমি উদ্ধারে পদক্ষেপ নিবো।
ময়মনসিংহ রেঞ্জ কর্মকর্তা মেজবাউল ইসলাম বলেন, এটি যেহেতু বনবিভাগের জায়গা তাহলে বন বিভাগ অবশ্যই কর দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, আমি অবগত ছিলাম না, এখন যেহেতু জেনেছি, সুতরাং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাহায্য নিয়ে এই ভূমি উদ্ধার করে সামাজিক বনায়নের আওতায় আনা হবে। বন বিভাগের ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, এই ভূমি উদ্ধারের বিষয়ে প্রশাসনের সহায়তা নিতে হবে। স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।