ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক : টাকার প্রয়োজন মেটাতে প্রথমে নিজের কিডনি বিক্রি করেন নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার নাজিম উদ্দিন (৩৮)। এরপর এলাকার অভাবগ্রস্ত মানুষদের প্রলোভন দেখিয়ে শুরু করেন কিডনি বিক্রির ব্যবসা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ার) রাতে জেলা সদরের বাগড়া বাজার এলাকার নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়ক থেকে অভিযুক্ত নাজিমকে আটক করেছে। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাজিম উদ্দিন পূর্বধলা উপজেলার শানখলা গ্রামের মৃত উমেদ আলীর ছেলে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কিডনি বিক্রিতে সম্মতি দেয়া ব্যক্তির একটি পাসপোর্টসহ নাজিমকে আটক করে পুলিশ। নাজিম গত কয়েক বছরে অভাবগ্রস্ত কমপক্ষে ১৬ জন বাংলাদেশিকে ভারতে নিয়ে কিডনি বিক্রি করিয়েছেন। আর সেই কিডনি বিক্রির টাকায় মোটা অংকের ভাগ বসিয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে , নাজিম উদ্দিন এ পর্যন্ত তার এলাকার ১৬ জনের কিডনি বিক্রি করিয়েছেন। শানখশা গ্রামের সুজন মিয়ার স্ত্রী মেহেরা খাতুন (৫৫), ছেলে নূর আলম, একই গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে এয়ারখান, কুদরত আলীর ছেলে সফিকুল ইসলাম, আসন আলীর ছেলে আলাল উদ্দিন, উমেদ আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন (আটক), তার স্ত্রী ও তার বোন ফচিকা গ্রামের শাহীদা খাতুন, শানখলা গ্রামের উমর আলীর ছেলে আব্দুর রশিদ, একই গ্রামের আবুল কাশেমের স্ত্রী রুমা আক্তার, হবিবপুর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিন, একই গ্রামের তোতা ফকিরের ছেলে রমজান আলী ও মহেন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে খোকন মিয়া কিডনি বিক্রি করেছেন। বর্তমানে কিডনি বিক্রি করতে ভারতে আছেন শানখলা গ্রামের সবুজ মিয়ার স্ত্রী সেলিনা খাতুন।
নেত্রকোনা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ নূর এ আলম জানান, নাজিম উদ্দিনকে আটকের পর তার বিরুদ্ধে পৃথক আইনে দুটি মামলা করে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ পুরিদর্শক আজাহারুল ইসলাম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) তপন চন্দ্র বাকালী, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মশিউল হকের যৌথ অভিযানে নাজিমকে আটক হয়।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী জানান, নাজিম আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্রের সদস্য। তাকে আটক করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এই চক্রের অন্যান্যদের আটক করতে অবিযান চলছে।