ইসলাম ডেস্ক: মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ ভরসা রাখা মুমিনের বৈশিষ্ট্য। কোনো ব্যক্তি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা না রেখে মুমিন হতে পারে না। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর ওপরই ভরসা করতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর ওপরই তাওয়াক্কুল করো, যদি তোমরা মুমিন হও। (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ২৩)।
তাওয়াক্কুল আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো নির্ভর করা, ভরসা করা, আস্থা রাখা। ‘তাওয়াক্কুল আল্লাহ’ অর্থ আল্লাহর ওপর ভরসা করা। ইসলামের পরিভাষায় যেকোনো প্রয়োজন কিংবা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ নির্ভর করাকে তাওয়াক্কুল বলে। আল্লাহর ওপর ভরসা করার নানা পর্যায় রয়েছে। কেউ মুখে মুখে ভরসার কথা বলে, কেউ সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের ওপর ভরসা করে, কেউ বা সর্বদাই সব কাজে আল্লাহর ওপর ভরসা করে। এটি তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়। আল্লাহর ওপর যার আস্থা যত বেশি, তার সফলতা ও পরিপূর্ণতা তত বেশি। কারণ সফলতা একমাত্র আল্লাহরই হাতে।
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আল্লাহ যদি তোমাকে কোনো ক্ষ’তি পৌঁছান, তবে তিনি ছাড়া তা দূর করার কেউ নেই। আর তিনি যদি তোমার কল্যাণ চান, তবে তাঁর অনুগ্রহের কোনো প্রতিরো’ধকারী নেই। তিনি তাঁর বান্দাদের যাকে ইচ্ছা তাকে তা দেন। আর তিনি পরম ক্ষ’মাশীল, অতি দয়ালু।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ১০৭)
তাওয়াক্কুল একটি গুণ, একটি ইবাদত। এটি অর্জন ছাড়া ইমান অসম্পূর্ণ থাকে। আবার যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা রাখে, তিনি তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে : ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।’ (সুরা : তালাক, আয়াত : ৩) অন্য আয়াতে এসেছে : ‘তুমি কোনো সংক’ল্প করলে আল্লাহর ওপর ভরসা করো।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)
আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার একটি মাধ্যম হলো, সব বিষয়ে আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা রাখা। তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করা। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৫৯)
আমরা যদি আল্লাহর ওপর শতভাগ তাওয়াক্কুল করতে পারতাম। তবে দুনিয়া ও আখিরাত দুটিই আমাদের হাতে ধ’রা দিত। কিন্তু আমরা তা না করে দুনিয়ার পে’ছনেই ছু’টছি। আল্লাহর হুকুম-আহকাম ভুলে নিজেদের দুনিয়াবি স্বা’র্থ হাসিলেই ব্যস্ত রয়েছি।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহ তাআলার ওপর নির্ভরশীল হতে তাহলে পাখিদের যেভাবে রিজিক দেওয়া হয় সেভাবে তোমাদেরও রিজিক দেওয়া হতো। এরা সকালবেলা খালি পেটে বের হয় এবং সন্ধ্যাবেলায় ভরা পেটে ফিরে আসে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৪৪)