বারো বছর আগের ঘটনা। এখনো মনে রয়েছে শোয়েব আখতারের। কেকেআরের জার্সিতে সই করানো হয়েছিল পাকিস্তানি পেসারকে। নাইট রাইডার্সের জার্সিতে প্রথম ম্যাচেই বল হাতে আগুনে পারফরম্যান্স করেছিলেন। ১১ রানের বিনিময়ে চার উইকেট তুলে নিয়েছিলেন রাওয়ালপিণ্ডির সুপারস্টার। শোয়েবের বোলিংয়ে ভর করেই শাহরুখের নাইট রাইডার্স দুরন্ত জয় পেয়েছিল বীরেন্দ্র শেওয়াগের দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে।
শোয়েবের সেই বোলিংকে কুর্নিশ জানিয়েছিল ইডেন গার্ডেন্স। দর্শকরা পাকিস্তানি পেসারকে ভালোবাসায় মুড়ে দিয়েছিলেন। তারকা পেসারের পারফরম্যান্সে উদ্বেলিত হয়ে শাহরুখ খানও গোটা মাঠ জুড়ে ছুটতে শুরু করেছিলেন।
সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করেই শোয়েব বলছিলেন, “আমি ৪ উইকেট নেয়ার পরে প্রত্যেকেই পাগল হয়ে গিয়েছিল। শাহরুখ তো মাঠের চারপাশ দিয়ে ছুটতে শুরু করেছিল। প্রবলভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল শাহরুখ। আমার মনে হচ্ছিল, বিশ্বকাপ জিতে ফেলেছি নাকি! এতটাই গোটা পরিবেশ পাগল করার মতো হয়ে গিয়েছিল।”
শাহরুখ পরে শোয়েব আখতারকে ডেকে আলাদা করে কথাও বলেছিলেন। পাকিস্তানি পেসারকে কিং খান বলেছিলেন, “তুমি আমাদের হয়ে দারুণ একটা ম্যাচ জিতেছ।”
প্রথম মরশুমে কেকেআর যে তিন তারকাকে মার্কি হিসেবে সই করিয়েছিল, তাদের মধ্য়ে অন্যতম শোয়েব আখতার। পরে সৌরভ নিজের আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন, “আমি জানতাম শোয়েবের দুরন্ত গতি স্বল্প গতির ফর্ম্যাটে তফাত গড়ে দেবে। এটাই হয়েছিল। আমরা শেওয়াগদের দিল্লি ডেয়ারডেভিলসদের উড়িয়ে দিয়েছিলাম। রাওয়ালপিণ্ডি এক্সপ্রেস ওদের সাফ করে দিয়েছিল। শোয়েব ১১ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিল। আমরাও একটা লো স্কোরিং থ্রিলার জিতেছিলাম। এটা দুরন্ত একটা জয় ছিল। তবে জয়ের এই ধারা আমরা ধরে রাখতে পাারিনি।”
শোয়েবের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আরও শেয়ার করে সৌরভ বলেছিলেন, “আমি যা ভেবেছিলাম, তার থেকেও কঠিন ছিল শোয়েবকে নিয়ন্ত্রণ করা। টুর্নামেন্টে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে শোয়েব হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল না খেলার। আমার অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও শোয়েব তিন ম্যাচ খেলার পরে আর খেলেনি।”
সৌরভের আরো সংযোজন ছিল, “শোয়েব বলেছিল ওর চোট রয়েছে। তবে আমার কাছে ওর চোটটা রহস্যজনক ছিল। আমি ওকে কার্যত অনুরোধ করি, মাত্র ৪ ওভারই বোলিং করতে হবে। আমি বুঝিয়েছিলাম ছোট চোট নিয়েও ওর খেলা উচিত। তবে ওকে রাজি করানোটা প্রায় অসম্ভব ছিল।”
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস