স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় এসএসসি পরীক্ষার হলরুমে শিক্ষকের অপমান ও হুমকির শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী পূর্ণতা পাল তিসির পাঁশে দাঁড়ালেন ধোবাউড়ার ইউএনও রাফিকুজ্জামান। সামনের পরীক্ষাগুলোতে তিসির শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
গতকাল ময়মনসিংহ লাইভে হুমকির শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী পূর্ণতা পাল তিসির ফেসবুক স্ট্যাটাসের আলোকে আবেগন ক্ষোভ সংবাদ আকারে প্রকাশ হয়। আর তা মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভাইরাল হয়। এ সংবাদ ইউএনও জানতে পেরে পূর্ণতা পাল তিসির সাথে কথা বলার উদ্যোগ নেন। আর ইউএন’র এ উদ্যোগের কথা তিসির ভাই হিমেল পাউল তুষার নিশ্চিত করেন।
তিসি ধোবাউড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অনেক বড় ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে তার। সদর ইউনিয়নের স্বর্ণকার হারান পালের মেয়ে তিসি জানান, ৭ম থেকে ৮ম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার সময় সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়েও রোল নাম্বার ২ হয়। জনৈক শিক্ষকের মেয়ে কম নাম্বার পেলেও তার রোল ১ হয়। তখন মেয়ের কান্না দেখে তিসির বাবা শিক্ষকদের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করলে শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে তাকে চরম অপমান করা হয় । এরপর জেএসসি পরীক্ষার সময় হলরুমে হেনস্থার শিকার হয় সে, কতিপয় শিক্ষক তাকে হলরুমেই গালিগালাজ করে। এত কিছুর পরও তিসি এ প্লাসসহ বৃত্তি পায়। তিসির বাবা হারান পাল বিষয়টি শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে, উল্টো তাকেই অপমানিত হতে হয়েছে। তিসির জেএসসি পরীক্ষার সময়ের ঘটনার রেশ ভয়াবহ রুপ নিয়েছে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায়। ৩ তারিখ প্রথম পরীক্ষা থেকেই শুরু হয় শিক্ষকদের মানসিক নির্যাতন।
ভুক্তভোগী তিসি সাংবাদিকদের জানান, “হল সুপার ২য় পরীক্ষার দিন বকুল স্যারকে আমাকে দেখিয়ে বলে এটা হারানের মেয়ে। এর পর আমাকে চিহ্নিত করে প্রতিনিয়তই গালাগালাজ ও ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ করতে থাকে। এতে পরীক্ষায় মনোনিবেশ করতে কষ্ট হচ্ছে। আর প্রতিদিন পরীক্ষা দিতে গিয়ে দেখি আমার সিট পরিবর্তিত হয়ে যায়। এতে হতাশায় পড়ে আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিই। এজন্য আমি ধোবাউড়ার শিক্ষিত সমাজকে দায়ী করে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দেই।”
তিসির মা সঞ্চিতা পাল মেয়েল কষ্টের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমার মেয়েটার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। তার বাবা শিক্ষিত নয় বলে কি শিক্ষকরা তার স্বপ্ন পূরন হতে দেবে না?”
এ বিষয়ে হল সুপার ফয়েজ উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ঘটনা শুনেছি, তবে মেয়ের অভিযোগ সত্য নয়। বকুল স্যার পরীক্ষার হলে যাননি। সামনের পরীক্ষায় হারানের মেয়ের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিকুজ্জামান বলেন, “আমি মেয়েটির সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করেছি।”