রিফাত আহমেদ রাসেল, দুর্গাপুর(নেত্রকোনা) : স্কুলের খেলার মাঠ দখল করে একদল প্রভাবশালী হাজারো শিক্ষার্থীকে খেলাধূলা বিমুখী করতে উঠে পড়ে লেগেছে। প্রভাবশালীদের হুমকি ধামকিতে কোথাও কোনো অভিযোগ দিতে পারছেনা স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী। শিক্ষার্থীরা নির্ভিঘ্নে তাদের খেলার মাঠে ফিরে যেতেও উধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে। ২০১৬ সালে নেত্রকোনা জেলা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠের উপর দিয়ে সকল প্রকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাস্তবে এর কোন কার্যকারিতা নাই।
‘‘ক্রীড়াই শক্তি ক্রীড়াই বল-সুস্থ্য দেহ সুন্দর মন’’ এই প্রবাদটি যেন ভেস্তে যেতে বসেছে দুর্গাপুর পৌরশহরের বিরিশিরি পিসিনল মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়টির একটি মাত্র খেলার মাঠ। তাও গত ৮ বছর ধরে দখল করে বালুবাহী ট্রাক চলাচলের রাস্তার বানিয়েছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
অভিযোগ রয়েছে, গারো ব্যপ্টিষ্ট কনভেনশন (জবিসি) পরিচালিত শতবর্ষ পুরোন বিরিশিরি পিসিনল মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে মোটা অংকের টাকার বিপরীতে প্রভাবশালীরা মাঠটি দখল করে ডাইভারশন তৈরি করে বালুবাহী ট্রাক চলাচলের রাস্তা বানিয়েছে। জিবিসি কর্তৃপক্ষ মাঠ ব্যবহারে বালু ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। মাঠ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে ইতোপূর্বে ক্রীড়ামোদী জনগনসহ সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ মানববন্ধনও করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্গাপুরের ঐতিহ্যবাহী এই খেলার মাঠের উপর দিয়ে সোমেশ্বরী নদী থেকে বালু, পাথর, কয়লা বহনকারী ট্রাক, লড়ি সহ বিভিন্ন যানবাহন বালু পরিবহন করে আসছে। প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪শ বালুবাহী ট্রাক চলাচল করে এই মাঠের উপর দিয়ে। আর মাঠ দিয়ে ট্রাক চলাচলের জন্য প্রতি ট্রাক থেকে ২৫০টাকা করে চাঁদা রাখছে জিবিসি (গারো ব্যপ্টিষ্ট কনভেনশন) ও স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আদিবাসী নেতা বলেন, যেখানে খোদ জিবিসি কর্তৃপক্ষ এই চাঁদা উঠানোতে জড়িত রয়েছে সেখানে আদালতের নিষেধাজ্ঞা করবে কি? আইন লঙ্ঘন করে মামলার বিষয়টি আড়াল করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার কারনে খেলার মাঠ দিয়ে গাড়ী চলাচলের সুযোগ হয়েছে। মাঠের পুরো অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থী, এলাকার সিনিয়র সিটিজেনসহ শিশুরাও বঞ্চিত হচ্ছে খেলাধুলার সুযোগ থেকে।
বিরিশিরি পিসিনল মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, খেলার মাঠ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, এ নিয়ে নেত্রকোনা জজ কোর্টে মামলাও চলমান, মাঠ থেকে টাকা উঠানোর ব্যপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।
স্কুলটি এসএমসি সভাপতি সহ:অধ্যাপক সমরেন্দ্র রিছিল বলেন, আমরা অনেকাংশে জিম্মি হয়ে গেছি। আমাদের দুর্বলতার কারণেই সুযোগ নিচ্ছে নানা মহল। টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জিবিসি সভাপতি শৈবাল সাংমা‘র সাথে কথা বলতে বলেন।
এ বিষয়ে জিবিসি সভাপতি শৈবাল সাংমা মাঠ থেকে চাঁদা উঠোনোর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, মাঠের জায়গা জিবিসি‘র নামে রয়েছে, মাঠকে কেন্দ্র করে মামলাও চলছে। এর বেশি আর কিছু বলতে পারবো না।