সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে চিঠি দিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা কামাল হোসেনকে – তাতে ‘সংবিধান সম্মত সকল বিষয়ে’ আলোচনার কথা আছে। এর মানে কি এই যে প্রধানমন্ত্রী সংলাপে রাজি হলেও ‘বর্তমান সংবিধানে যা আছে সেভাবেই নির্বাচনের’ অবস্থান থেকে নড়ছেন না?
ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দাবি ‘সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন’ – যা মেনে নিলে সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে এবং সরকারি দল কোনভাবেই তাতে রাজী নয় বলে বহুবার জানিয়েছে।
তাহলে প্রশ্ন: বিরোধীদের দাবি কতদূর মেনে নিতে পারেন শেখ হাসিনা? উপেক্ষিত হলে বিরোধীদের সামনেই বা বিকল্প কি?
বৃহস্পতিবার যে সংলাপ গণভবনে শুরু হচ্ছে তার পরিণতি শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়াবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তো বটেই, বিশ্লেষকদের মধ্যে, এমনকি সাধারণ মানুষদের মধ্যেও।
বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় পাতায় বহু পাঠক মন্তব্য করছেন, এই সংলাপ অর্থবহ কিছু বয়ে আনবে তা নিয়ে তাদের ভরসা নেই। বাপি সাইদ নামে একজন লিখছেন, “সংলাপ হবে। দাবী গুলো উপস্থাপন করা হবে। তারপর এগুলো পক্ষে বিপক্ষে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। সরকারী দল একটা বা দুইটা দাবী মানবে চাইবে তাও আবার শর্ত সাপেক্ষে। ঐক্যফ্রন্ট ওয়াক আউট করবে। আবার ডাকা হবে এভাবে সময় ফুরিয়ে যাবে। এক দিন দু’ দিন করে বৈঠক চলতে চলতে অমীমাংসিত অবস্থায় ঝুলে যাবে।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার ড তারেক শামসুর রহমান বলেন, সংলাপ “ফলপ্রসূ” হবে তা তিনি নিশ্চিত করে ভাবতে পারছেন না।
কারণ, তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পরিষ্কার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি কতটা দাবি দাওয়া মানতে পারবেন।
ড. রহমান বলেন, “সংবিধান সম্মত শব্দটি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবারো বুঝিয়ে দিয়েছেন যে সংবিধানের ধারার বাইরে তিনি যাবেন না। সাত দফার অন্য কিছু তিনি হয়তো মেনে নিতে পারেন, কিন্তু সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তিনি মানবেন সে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।”