নির্বাচনে কোন দলকে সমর্থন করবে যুক্তরাষ্ট্র- যা বললেন বার্নিকাট

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে সরকারের আলোচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট। তাছাড়া অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সরকার প্রতিশ্রুত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর সাথে বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মার্সিয়া বার্নিকাট আরো বলেন, জনগণ যদি মনে করে পরিবেশ সুষ্ঠু হয়েছে, তবে বোঝা যাবে যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এসময় তিনি বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তবে দ্রুতই তা থেকে উত্তরণ হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন মার্সিয়া বার্নিকাট।

তিনি বলেনি, বিশেষ কোনো দল বা জোটের প্রতি সমর্থন নেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। এসময় সরকার ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বার্নিকাট বলেন, সংলাপের উদ্যোগ নেয়াটাই প্রাথমিকভাবে বড় অর্জন। বিশেষ কোনো দল বা জোটের মধ্যেও সংলাপ সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে

এদিকে বাসস জানায়, বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তাঁর বিদায়ী সাক্ষাতে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

মঙ্গলবার সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বার্নিকাটের বিদায়ী সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম একথা বলেন।

‘বাংলাদেশের উন্নয়নে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে,’ বার্নিকাটের এই বক্তব্য উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত-উভয়েই সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে ‘চমকপ্রদ’ আখ্যায়িত করে ‘এই প্রজন্মই দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে’ বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বার্নিকাট এ সময় বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর পরিশ্রমেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন বলে জানান তিনি।

শিক্ষাকে সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, যে কোন দেশের উন্নয়নে এটি একটি বড় বিষয়।

বার্নিকাট বাংলাদেশে উৎপাদিত আম ও লিচুরও প্রশংসা করেন।

সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন খাতে তাঁর সরকারের সাফল্যের চিত্র তুলে ধরে বলেন, তাঁর মূল লক্ষ্যই দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা।

’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায়ের পর বাধ্য হয়ে ৬ বছর প্রবাস জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হবার পর দেশে ফিরে আসার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেশের প্রতিটি প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়ে মানুষের দুরাবস্থা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করেছি।’

সেই অভিজ্ঞতা থেকেই দেশকে কিভাবে উন্নত করা যায় তার পরিকল্পনা তিনি করেছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই অবস্থা থেকে বাংলাদেশের আজকের পর্যায়ে উত্তোরণ ঘটেছে।’

দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে তাঁর সরকারের পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আগে এক মৌসুমের তরিতরকারি অন্য মৌসুমে পাওয়া যেত না।’

‘কিন্তু, আমরা এখন সারাবছর জুড়েই সবধরনের তরিতরকারি পাচ্ছি, এটা আমাদের গবেষণা এবং কৃষি গবেষকদের অবদান’, যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বার্নিকাটের সর্বাঙ্গীন সাফল্যও কামনা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top