বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-২০ শুরু আজ

বিসিবি-পিসিবি কর্মকর্তাদের নানা আলোচনার পর অবশেষে দুবাইয়ে আইসিসির সভায় সমঝোতার ভিত্তিতে সমাধান। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন দফায় পাকিস্তান সফরে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বেলা ৩টায় শুরু হবে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথম লড়াই। সিরিজ জয়ের ব্যাপারে উভয় দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও বাবর আজম আশাবাদী।

এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৯২টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। ৩০টিতে জয়, ৬০টিতে হারের স্বাদ পেয়েছে। দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের জয়ের পাল্লা ভারী। ১৪৯টি টি-২০ ম্যাচের মধ্যে ৯০টিতে জয় ও ৫৫টিতে হেরেছে পাকিস্তান। চারটি ম্যাচ পরিত্যক্ত ও টাই হয়। পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও, টানা ছয় ম্যাচের হার নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামবে স্বাগতিকরা।

টি-২০ র্যাংকিং-এ নবমস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের মাটিতে ভয়ঙ্কর দল পাকিস্তান। অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ হাফিজকে দলে ভিড়িয়েছে তারা। তবে দুর্দান্ত ফর্মে থাকার পরও আরেক বাঁ হাতি পেসার মোহাম্মদ আমিরকে দলে নেয়নি পাকিস্তান। বাংলাদেশও সেরা দুই খেলোয়াড় মুশফিকুর রহীম ও সাকিবকে ছাড়া খেলতে নামবে। পাকিস্তানে নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে সফর থেকে নিজকে গুটিয়ে নিয়েছেন মুশফিক। আর জুয়াড়ির তথ্য গোপন করায় আইসিসি কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় আছেন সাকিব।

সর্বশেষ ২০০৮ সালে পাকিস্তান সফর করেছিল বাংলাদেশ। প্রায় এক যুগ বিরতি দিয়ে ফের নতুন করে পথচলা লাল-সবুজদের। ২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা দল বহনকারী বাসে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের মাটিতে খেলতে যায়নি বিশ্বের অন্য ক্রিকেট দলগুলো। সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা দলের পাকিস্তান সফর কিছুটা আশার আলো জাগালেও পুরোপুরি নির্ভার করতে পারেনি বাংলাদেশকে। তবে আইসিসি থেকে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য চাপ থাকায় বাধ্য হয়েই পাকিস্তান সফর করছে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী। এমন অবস্থায় নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে ক্রিকেটের প্রতি নজর রাখছে ক্রিকেটাররা।

সমঝোতায় চার মাসে তিন দফায় পাকিস্তান সফর করবে বাংলাদেশ। প্রথম দফায় তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ। দ্বিতীয় দফায় ফেব্রুয়ারিতে একটি টেস্ট এবং এপ্রিলে তৃতীয় দফায় একটি ওয়ানডে ও টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। এফটিপি অনুযায়ী আগে শুধু দু’টি টেস্ট ও তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজের কথা ছিল। এবার নতুন করে ওয়ানডে যোগ হয়েছে। তবে টেস্ট ও ওয়ানডে নিয়ে এখনি চিন্তা করছে না বাংলাদেশ। মাহমুুদুল্লাহর চিন্তায় শুধু টি-২০।

 সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জয় ও বাকিগুলোতে হারের স্বাদ রয়েছে বাংলাদেশের। অপর দিকে টি-২০ তে নাম্বার ওয়ান দল হলেও পাকিস্তানের অবস্থা নাজেহাল। সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে তারা। আটটিতে হেরেছে। বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে বাকি ম্যাচটি।
টি-২০ তে শীর্ষে পাকিস্তান। অতীতের ধারাবাহিকতায় র্যাংকিং-এর শীর্ষে উঠে তারা। কিন্তু বর্তমানে পাকিস্তানের ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে অস্ট্রেলিয়া। পাকিস্তানের রেটিং ২৭০, অস্ট্রেলিয়ার ২৬৯। তাই অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে মাত্র একটি রেটিং পেছনে পাকিস্তান। ২৬৫ রেটিং নিয়ে তৃতীয় স্থানে ইংল্যান্ড। এরপর আছে নিউজিল্যান্ড (২৬২) ও ভারত (২৬০)। বাংলাদেশ সিরিজ জিতলে রেটিং-এ উন্নতি হবে। আর পাকিস্তান এক ম্যাচ হারলেও বর্তমান র্যাংকিং হারাবে।

মুশফিক-সাকিব না থাকলেও বঙ্গবন্ধু বিপিএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে সিরিজ নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ। বিপিএলের ফর্ম সিরিজে প্রদর্শন করতে পারলে সাফল্য পেতে সমস্যা হবে না বলে মনে করেন মাহমুদুল্লাহ, ‘এই ফরম্যাটে পাকিস্তান দুর্দান্ত দল, এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাদের পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে বুঝা যাবে, আমরা দ্রুতই উন্নতি করছি। দেরিতে হলেও, এই ফরম্যাটে আমরা স্মরণীয় কিছু ম্যাচ জিতেছি। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের যেকোনো দলকে হারাতে পারি। বিপিএলে স্থানীয় ব্যাটসমস্যান ও বোলাররা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন। সবাইকে নিয়েই পাকিস্তানে সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’

বাবর আজমকে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের অধিনায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনিও বলেছেন, উত্তরসূরিদের রাখা র্যাংকিংকে সমুন্নত রাখতে তার দল বদ্ধপরিকর।

Share this post

scroll to top