বিশেষ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদ ছোঁয়া বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-৩ (শম্ভুগঞ্জ সেতু) এর নির্মাণ ব্যয় ছিল ৪৩ কোটি টাকা। ১৯৯২ সালের পহেলা জানুয়ারি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। আর প্রথম দিন থেকেই টোল আদায় শুরু হয়। গত ২৮ বছরে টোলের ইজারা বাবদ আদায় হয়েছে নির্মাণ খরচের প্রায় তিনগুণ। কিন্তু টোল আদায় বন্ধ হয়নি; বরং দিন দিন বেড়েছে। স্থানীয় নাগরিক, পরিবহন মালিক-চালক-শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবৎ এ সেতুর টোল মওকুফের দাবি জানালেও মোটেও কর্ণপাত করছে না স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। উল্টো অর্থ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘দোহাই’ দিয়ে চলছে ‘টোলবাজি’। সেতু নির্মাণের ব্যয়ের টাকা অনেক আগেই সরকার তুলে নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এসেতু দিয়ে দিনে ৫ হাজারেরও বেশি যানবাহন চলাচল করে। যানবাহনের আকার ভেদে নির্ধারিত টোল ১০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। হেভি ট্রাক ১৩৫ টাকা, মিডিয়াম ট্রাক ১০০ টাকা, বড় বাস ৬৫ টাকা, মিনি ট্রাক ৭৫ টাকা, পাওয়ার টিলার ৬০ টাকা, মিনিবাস ৩৫ টাকা, মাইক্রোবাস ও হায়েস ৪০ টাকা, প্রাইভেটকার ২০ টাকা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে ১৫ টাকা টোল আদায় করা হচ্ছে। এ সেতুতে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইজারা বাবদ আদায় হয়েছে কমপক্ষে ১১০ কোটি টাকা। এ সেতুতে প্রতিটি যান থেকে কমপক্ষে ১৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা আদায় করা হয়।
গত অর্থ বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার বিনিময়ে স্থানীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) থেকে সেতুটির ইজারা নেয় মেসার্স মোস্তফা কামাল নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, সেতু নির্মাণের খরচ উঠেছে সেই কবেই। অথচ এখনও প্রতি বছর কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই টোলের হার বাড়ছে। রাতে শম্ভুগঞ্জ সেতুটিতে কোনো সড়কবাতিই জ্বলে না। ওই সময় অনেকটা আতঙ্ক নিয়েই যানবাহন চালাতে হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান ময়মনসিংহ লাইভকে জানান, সরকারের নির্দেশেই বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-৩ (শম্ভুগঞ্জ সেতু) থেকে টোল আদায় হচ্ছে। আমরা শুধু ইজারা দেই। আর প্রতিদিনের টাকার হিসেব নিকেশ ইজারদারী প্রতিষ্ঠানই করে।
Comments are closed.