জিয়া অরফানেজ মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে সোমবার বিকেলে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ডের রায় হাইকোর্টে বহাল থাকবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে আজকের দিন ধার্য করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল আবেদনে তার খালাস চেয়েছেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন চেয়েছেন। আর রাষ্ট্রপক্ষ বিচারিক আদালতের দেয়া ৫ বছরের সাজাই বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়েছে।
এর আগে এদিন দুপুরে এ মামলায় হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিল নিষ্পত্তিতে সময় বাড়ানোর আবেদন খারিজ করে দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ।
ফলে আগে নির্ধারণ করে দেয়া ৩১ অক্টোবর সময়ের মধ্যেই আপিল শুনানি শেষ করতে হচ্ছে।
এছাড়া এ মামলায় অর্থের উৎস স্পষ্ট করতে অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে খালেদা জিয়ার যে আবেদনটি হাইকোর্টে নথিভুক্ত রাখা হয়েছে, সেটিও একদিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয় আদেশে।
কিন্তু আপিল বিভাগের এ আদেশের পর সোমবার বিকালে শুনানি শেষ করে রায়ের জন্য আজ (মঙ্গলবার) দিন ধার্য করেন হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ। সোমবার আপিল বিভাগে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন।
উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন ও ব্যারিস্টার এহসানুর রহমান। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। এরপর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল করেন।
২২ ফেব্রুয়ারি আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে খালেদা জিয়ার অর্থদণ্ড স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এরপর ৭ মার্চ অপর আসামি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করা হয়। ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
চার সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও খালেদা জিয়াকে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। তবে আদালত বলে দেন, রুলের ওপর শুনানি হবে খালেদা জিয়ার আপিলের সঙ্গে।
আদালত আদেশে বলেন, দুদক আইনে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হয়ে এ ধরনের রিভিশন বা আপিল দুদক করতে পারে কি না, সে বিষয়টি আলোচনা ও ব্যাখ্যার দাবি রাখে। ১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালত। ১২ জুলাই আপিল ও রুল শুনানি শুরু হয়।