প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া শাড়ি ভাগ করাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। যার মধ্যে একজন গুরুতর আহত হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সালসাবিল নামে হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শাড়ি বিতরণ কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আগের রাতে কর্মীদের শাড়ি বিতরণ করছিলেন হলের সাধারণ সম্পাদক রওনক জাহান রাইনসহ হল ছাত্রলীগের নেত্রীরা।
এ সময় কর্মীদের মধ্য থেকে ৬ জন শাড়ি না পাওয়ায় তারা যার যার রুমে চলে যায়। পরে হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সালসাবিল রাবেয়া ছয় ৬টি শাড়ি সেখান থেকে নিয়ে ৬ জনের রুমে গিয়ে দিয়ে আসেন। সালসাবিল ৬টি শাড়ি কর্মীদের দেওয়ার কারণে ওই সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রওনক জাহান রাইন। সে সময় বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়।
আরো জানান, এদিকে শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে সালসাবিল রুমে গিয়ে দেখেন তার রুমের সকল জিনিসপত্র বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে রাইনের কর্মীরা। পরে সালসাবিল প্রতিবাদ করলে রওনক জাহান রাইয়ানসহ তার কর্মীরা তার ওপর তিন দফায় হামলা চালায়। এ সময় হলের হাউজ টিউটর ও হল সংসদের এক সম্পাদকের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে।
সালসাবিলকে হল থেকে মারতে মারতে হল গেটের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হলের আরেক পক্ষের দাবি করেছে সালসাবিল আজকে আগে হামলা করেছে। সালসাবিলের হামলায় হলের পাপিয়া নামে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এরপর হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে সালসাবিলকে মারতে মারতে হল থেকে বের করে দেয়। এ সময় নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষক (হাউস টিউটর) মারামারি থামাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়।
এদিকে ঘটনার পরপরই হলের সাধারণ ছাত্রীরা ছাত্রলীগ নেত্রী ও অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া সম্পাদক রিয়া আকতারের বহিষ্কারের দাবিতে হলের সামনে বিক্ষোভ করছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, ওখানে একাধিক ছাত্রীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে প্রক্টরিয়াল টিম পাঠিয়েছি। হলের প্রাধ্যক্ষ এবং আবাসিক শিক্ষকরা সেখানে রয়েছেন। আশা করছি সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
মারধরের শিকার হলের আবাসিক শিক্ষক ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন বলেন, ‘একটা মেয়েকে মারধর করছিল। খবর পেয়ে শিক্ষক হিসেবে ওই মেয়েকে রক্ষা করতে যাই। কিন্তু হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বেনজির হোসেন নিশি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমি হাতে ব্যথা পেয়েছি। শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত।’