অনৈতিক কাজের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বন্ধুদের নিয়ে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানায় স্বামীসহ চার জনকে ও অজ্ঞাত আরো পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন তিনি। পুলিশ রবিবার বিকেলে স্বামীসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আজ সোমবার সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ওই নারীর স্বামী মো. রতন মিয়া (৩৫) ও নজরুল ইসলাম (২৫)। এজাহারে থাকা হাকিম মিয়া (৩০) ও আক্তার হোসেন (৪০) নামে দুই অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, গত তিন বছর আগে উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রামের দিনমজুর মো: রেজাকের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের এনায়েতনগর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে গ্রাম পুলিশ রতন মিয়ার (৩৫)।
ওই নারীর বাবা জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিসহ অনৈতিক কার্যকলাপে রাজি না করতে পেরে শারীরিকভাবে অত্যাচার নির্যাতন করা হতো তার মেয়েকে। এ অবস্থায় তিন বছরের মাথায় তার মেয়েকে রতন তালাক দেয়। এক সময় ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়ে মেয়েকে ফের বিবাহ করে বাড়িতে নেয়। কিন্তু কিছুদিন পর আবার শুরু হয় নির্যাতন। গত ১৫ দিন আগে তার মেয়েকে রতন জানান কয়েক দিনের মধ্যে তাকে (মেয়ে) একটি জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যাবে। সেখানে তার বন্ধুরা থাকবে। এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রতন মেয়েকে মারধর করে। পরে ওই নারী বাড়িতে চলে যায়।
এদিক, শনিবার ওই নারী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ফায়ার স্টেশনের পাশে অবস্থিত একটি বাসায় কাজ করতে যান। খবর পেয়ে রতন মিয়া ওই বাসা থেকে তাকে নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করার পর রাত নেমে আসে। তখন রতন তাকে (মেয়ে) বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে উপজেলার জাটিয়া ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের জনৈক বাবু মিয়ার একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। ওই বাড়িতে আগে থেকে অবস্থান করছিল কয়েকজন ছেলে। সেখানে যাওয়ার পর তাকে আটকে গণধর্ষণ করা হয়। এই ঘটনায় রবিবার সকালে মেয়েকে নিয়ে থানায় গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে লিখিত অভিযোগ দায়ের করান ওই নারীর বাবা।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া নজরুল ইসলামের স্ত্রী নাদিরা বেগম জানান, তার শিশু সন্তান কয়েকদিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ। তাকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করে যাচ্ছে তার স্বামী। এ অবস্থায় মিথ্যা কথা বলে তার স্বামীকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জের আঠারবাড়ি ইউনিয়নের রায়েরাবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ইনচার্জ) ইন্সপেক্টর মো. জালাল উদ্দিন বলেন, নির্যাতিতা নারী থানায় গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ জানিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তিনি মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) নিযুক্ত হয়েছেন। দুজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিডি মর্নিং