এবার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে যাচ্ছে সকার!

বাংলাদেশ তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি বাপেক্সের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে আজারবাইজানের তেল-গ্যাস উত্তোলনকারী কোম্পানি ‘সকার একিউএস ইন্টারন্যাশনাল ডিএমসিসি’। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীকে ১৬ ডিসেম্বর দেয়া এক চিঠিতে তাদের বিরোধ মীমাংসা করে যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করার আহ্বান জানায় সকার।

চিঠিতে তারা জানায়, বাপেক্সের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও বিরোধ মীমাংসা করা যায়নি। ফলে বাংলাদেশ বিরোধ মীমাংসা না করলে তারা আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে যাবে।

চুক্তি অনুযায়ী তিনটি কূপ খনন কাজের কথা থাকলেও একটি খনন করার পর তেল গ্যাস না পাওয়ার পর অন্যগুলিতে বাপেক্স আর সাহায্য করেনি বলে অভিযোগ করছে কোম্পানিটি। এদিকে বাপেক্স জানায়, সকারের বেশ কিছু ত্রুটির কারণে চুক্তি বাতিলের কথা বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি জড়িয়ে আছে বলে আমি মনে করি। আমরা স্থানীয়ভাবে আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজারবাইজান সফরের সময় এ বিষয়ে সে দেশের জ্বালানি মন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি অনুরোধ করেছেন বিষয়টি সমাধান করে দেয়ার জন্য। আমি এসে কথা বলেছি। যেটা দেখা যাচ্ছে, দায় দুই পক্ষেরই আছে। আশা করছি এ বিষয়ে আলোচনা করে একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবে উভয় পক্ষ।’

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রবিবার এ বিষয়ে জ্বালানি বিভাগ বৈঠকে বসছে। সেখানে বাপেক্স ও সকারের বিরোধ নিয়ে আলোচনা হবে। সকারের পক্ষ থেকে চারজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।’ আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

জানা জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরে আজারবাইজান সফরের সময় দেশটির পক্ষ থেকে সকারের বিষয়টি সমাধানের জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী এ সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। এরপর আজারবাইজানের জ্বালানি মন্ত্রী বাংলাদেশের বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠকও করেন।

২০১৭ সালের জুলাইয়ে খাগড়াছড়ির সেমুতাং-১, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ-৪ ও জামালপুরের মাদারগঞ্জ-১—এই তিনটি গ্যাস কূপ খননের জন্য চুক্তি করে আজারবাইজানের সকারের সঙ্গে বাপেক্স। এরপর ২০১৮ সালে খাগড়াছড়ির সেমুতাং-১ গ্যাস কূপ খনন শেষে কোনও গ্যাস পায়নি সকার। সমস্যা শুরু হয় দুই নম্বর কূপ খনন কাজ শুরু করার সময়। সেমুতাং থেকে বেগমগঞ্জ-৪-এর রিগ ও মালামাল নিয়ে কাজ শুরুর প্রস্তুতি নেয় সকার। কিন্তু বাপেক্সকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও তারা বিলে অনুমোদন দেয়নি। একপর্যায়ে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বাপেক্স। বিষয়টি সকার মেনে নেয়। কিন্তু চুক্তি বাতিল করলে সকারকে যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা তা দিতে চাচ্ছে না বাপেক্স। আর এ নিয়েই বিরোধে জড়িয়েছে দুই পক্ষ। এরমধ্যে বাপেক্সের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ক্ষতিপূরণ আর বকেয়া বাবদ প্রায় ১৪০ কোটি টাকা দাবি করেছে আজারবাইজানের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কোম্পানি সকার।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হান্নান বলেন, ‘সব দায় বাপেক্সের, এমন অভিযোগ ঠিক নয়। সকারেরও কিছু ত্রুটি রয়েছে।’ বাপেক্স যথাযথ কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় বিষয়টির সমাধান চায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ তেল গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি বাপেক্সের এর বিরুদ্ধে সকার এর নজীরবিহীন দৃষ্টান্তে ময়মনসিংহ লাইভ পরিবার গভীরভাবে উদ্ধেগ ও ধিক্কার জানাচ্ছে

Share this post

scroll to top