তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান বলেছেন, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কনস্যুলেট কেন এতদিন পর আমাদের তদন্ত করার অনুমতি দিয়েছে? কেন তাদের বক্তব্যের মধ্যে একেক ধরনের তথ্য ছিলো? হত্যার শিকার মানুষটির লাশ কোথায়? লাশটি দেখতে চাই। আমাদের সেসব প্রশ্নের উত্তর জানা দরকার।’ খবর আল জাজিরা
মঙ্গলবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতায় বলেন, গত ২ অক্টোবর জামালা খাশোগিকে হত্যা করার কয়েক দিন আগেই সৌদি কর্মকর্তারা তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তবে ভুললে চলবে না যে এটি হয়েছে তুরস্কের মাটিতে। ….. প্রমাণ বলছে, পরিকল্পিত কাজের ফল হিসেবেই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। ওই দলটি কেন ইস্তাম্বুল এসেছিলো? তাদের কে নির্দেশনা দিয়েছে?
তিনি বলেন, ‘আমি সৌদি সরকারকে অনুরোধ জানাই খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের ইস্তাম্বুলেই বিচারের আওতায় আনার সুযোগ দিতে।’
তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘সবার মনেই প্রশ্ন জাগছে কেন সেই ১৫ জন লোক ঘটনার দিনই ইস্তাম্বুলে এসেছিলো, কে তাদের নির্দেশদাতা সেটি আমাদের জানা দরকার’।
এরদোগান বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে সৌদি সরকার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। আমরা এখন সৌদি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই, শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িতদের নাম প্রকাশে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’
সোমবারই তুর্কি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলে যে, মঙ্গলবার সকালে পার্লামেন্টে দেয়া বক্তৃতায় এই রহস্য নিয়ে কথা বলবেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সে সময় তিনি প্রকাশ করবেন হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তদন্তে বের হয়ে আসা অনেক না জানা কথা। তারা বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবারের বক্তৃতায় এই ‘নোংরা সত্য’ নিয়ে কথা বলবেন।
গত কয়েক দিন ধরেই তুর্কি পুলিশ তদন্ত করছে বিষয়টি। তাদের তদন্তে ধীরে ধীরে রহস্যের জট খুলতে শুরু করে। হত্যাকাণ্ডের পর প্রথম ২ সপ্তাহ সৌদি আরব এ বিষয়ে অস্বীকার করলেও তারা এক পর্যায়ে স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। একের পর এক প্রমাণ উন্মোচিত হওয়ার কারণে সৌদি সরকার কোনো উপায় না পেয়েই স্বীকার করে।
এরদোগান তার বক্তৃতায় বলেন, ‘তিন সদস্যের একটি সৌদি দল হত্যাকাণ্ডের এক দিন আগে ইস্তাম্বুল আসে। তারা ইস্তাম্বুল ও ইয়ালোভার বনাঞ্চলেও গিয়েছিলো।’ তিনি বলেন, আরও দুটি পৃথক দলে ভাগ হয়ে কনস্যুলেটে আসে হত্যাকারীরা।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, ‘সৌদি কনস্যুলেটের ক্যামেরাগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। হার্ড ডিস্ক থেকে সব ভিডিও ও ছবি সরিয়ে দেয়া হয়। খাশোগি কনস্যুলেট ভবন থেকে বেড়িয়ে গেছেন এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, সৌদি সরকার এ ঘটনার কথা ৪ অক্টোবর অস্বীকার করে, কনসাল জেনারেল রয়টার্সের এক সাংবাদিককে আমন্ত্রণ করে দেখানোর চেষ্টা করে যে কিছুই ঘটেনি সেখানে’।