সরকার ২০২০-২০২১ সালকে ‘মুজিব বর্ষ’ পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ‘মুজিব বর্ষ’ পালন করার জন্য সারাদেশে সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে।
এই মুজিব বর্ষ থেকেই সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) বাংলা বিভাগের সিলেবাসের পাঠ্য তালিকায় পড়ানো হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’।
বাংলা বিভাগের ‘আত্মজৈবনিক রচনা’ শিরোনামে বিএনজি-২২৬ নম্বর কোর্সের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর লেখা এই আত্মজীবনী ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের থেকে পড়ানো হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর বাংলা বিভাগের সিলেবাস প্রণয়ন কমিটির সভায় ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ্য করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫৪তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পাঠ্য হিসেবে পড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়। ‘আত্মজৈবনিক রচনা’ শিরোনামে বিএনজি-২২৬ নম্বর কোর্সের অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর লেখা এই আত্মজীবনী ছাড়াও তিন ক্রেডিটের এই কোর্সে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবন স্মৃতি’, মীর মোশাররফ হোসেনের ‘আমার জীবনী’ ও রাজসুন্দরী দেবীর ‘আমার জীবন’ আত্মজীবনী পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হবে।
পাঠ্য সূচিতে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীর’ অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শাবির বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল করিম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থটি কারও একক নয়, এটি সার্বজনীন। একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে এর ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে হবে। আর এই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে বাংলাদেশ বিষয়ে বাস্তব ও সত্য ইতিহাস জানাতে সহায়তা করবে। দেশ-বিভাগ, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী অনেক অজানা ইতিহাস এই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে’ রয়েছে। তরুণ শিক্ষার্থীদের দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধিতে সত্য ইতিহাস জানার গুরুত্ব উপলব্ধি করেই এই জীবনী পাঠের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে পড়ানো হলেও, একমাত্র শাবিতেই প্রথম পাঠ্য আকারে পড়ানো হবে।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রওজান ফেরদৌস প্রভা বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় যেভাবে একজন বঙ্গবন্ধুকে জেনেছি, আশা করছি পাঠ্যসূচিতে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ আমাদেরকে তার অজানা অনেক বিষয়ে তথ্য দেবে। ‘বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে জানা সবারই দরকার। তবে পাঠ্যসূচির আলোকে বঙ্গবন্ধুকে জানার মাধ্যমে অনেক নতুন বিষয় বেরিয়ে আসবে আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে,’ মনে করেন তিনি।
বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, সবচেয়ে আনন্দের বিষয় যে আমরাই প্রথম এই কোর্সটিতে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ার সুযোগ পাচ্ছি। পৃথিবীর অন্য দেশের পাঠ্য তালিকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জীবনী পড়ানো হয়। বঙ্গবন্ধুর জীবনী আমাদের মতো তরুণ শিক্ষার্থীদের দেশ গড়ার নতুন স্বপ্ন সৃষ্টি করবে।
এ বিষয়ে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ইউএনবিকে বলেন, পাঠ্যসূচিতে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। ‘আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধুকে আরও বেশি করে পঠন-পাঠন করা দরকার। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে তরুণ প্রজন্মের আরও বেশি করে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানা উচিৎ এবং তার জীবনবৃত্তান্তকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ,’ বলেন তিনি। ইউএনবি