অতিথি প্রতিবেদক: ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আনন্দঘন পরিবেশে নগরীর ৭৩টি পূজা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে শুক্রবার মধ্য রাতে। বিকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্তরা একেক করে প্রতিমা নিয়ে কাচারীঘাটে ব্রহ্মপুত্র নদের বিসর্জন স্থলে আসতে থাকেন। ভক্তদের প্রতি শুভেচ্ছা এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নবগঠিত সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, শারদীয় দুর্গোৎস কেবল ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সামাজিক উৎসব। এই উৎসব বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। তৈরী হয় সামাজিক মেলবন্ধন।
তিনি বলেন, মানবতাই ধর্মের শাশ্বত বাণী। ধর্ম মানুষকে ন্যায় ও কল্যাণের পথ দেখায়। অন্যায় ও অসত্য থেকে দূরে রাখে।
বিসর্জন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা একে. এম. তারিকুল আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট বিকাশ রায়, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সমরেন্দ্র কিশোর চৌধুরী, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট তপন দে, সাধারণ সম্পাদক উওম চক্রবর্তী রকেট, সাবেক সভাপতি প্রদীপ ভৌমিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম নূরুজ্জামান খোকন, সদ্য বিলুপ্ত পৌরসভার প্যানেল মেয়র, পুরুষ ও নারী কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, জেলা এবং মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
ময়মনসিংহ নগরীর ৭৩টি প্রতিমা বিসর্জনে এবার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মো. ইকরামুল হক টিটু। এ জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সার্বিক সহযোগিতা নেন। সদ্য বিলুপ্ত পৌরসভা থেকে প্রতিটি মণ্ডপে নগদ অর্থ সহায়তা দেন। সংস্কার করা হয় নগরীর বিভিন্ন এলাকার সড়ক। ব্যবস্থা করা হয় পর্যাপ্ত আলোর। আইন শৃঙ্ঘলা বাহিনীর সহযোগিতায় নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিলো নগরীর পূজা মণ্ডপগুলো। নজরকাড়া থিমে সাজানো হয়েছিলো ব্রহ্মপুত্র নদের বিসর্জন ঘাটকে। এর আগে প্রশাসক টিটু কয়েকদফা বিসর্জন ঘাট পরিদর্শন করেন।
অন্যদিকে গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে তিনি নগরীর পূজা মল্ডপগুলো পরিদর্শন করেন। পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনের সময় জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, সদ্য বিলুপ্ত ময়মনসিংহ পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র, বিভিন্ন ওয়ার্ডের পুরুষ ও নারী কাউন্সিলর, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট বিকাশ রায়, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ কুদ্দুস, যুবলীগ নেতা শাহ শওকত ওসমান লিটন, কৃষক লীগ নেতা এবি সিদ্দিক, আবুল হাশেম রায়হান ও সুমন চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সিটি করপোরেশনের স্যানিটারী ইন্সপেক্টর দীপক মজুমদার জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের বিসর্জন ঘাট দিয়ে এবার ৭৩টি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় এবার ভিন্নভাবে বিসর্জন ঘাট প্রস্তুত করা হয়েছিলো। কাচারীঘাটের মেন সড়ক থেকে নদী পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য মাটি কেটে বিকল্প সড়ক তৈরী, বিসর্জন ঘাট এলাকার মাটি লেবেল, বিসর্জন মঞ্চ তৈরী এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়। কনজারভেন্সী ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ মহব্বত আলী জানান, সিটি করপোরেশনে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল স্থাপন করায় নগরীতে সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব পালন এবং বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে।