এস এ গেমসের রঙিন উদ্বোধন

সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের আয়োজকরা হাতে সময় পেয়েছেন খুব কম। গেমস ঠিক মতো হয় কিনা ছিলেন দ্বিধা-দন্দ্বে। অবশেষে সকলে মিলে পরিকল্পনা করেছেন গত দুই আসরের চেয়ে ভালো করবেন। হয়েছেও তাই। কাঠমান্ডুবাসীরা স্বীকার করে নিলেন জমকালো একটি উদ্বোধন হয়েছে। হয়েছে বর্ণিল। পারফরমেন্সের দিক দিয়ে ছাড়িয়ে গেছে তাদের মাটিতে আগের দুই আসরকে। সবচেয়ে বেশি মন ভরিয়েছে লেজার শো।

রোববার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিকেল পাঁচটায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দশরথ স্টেডিয়ামে লোক জড়ো হতে থাকে সকাল ১০টা থেকেই। ১২ হাজার নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত ছিলো সেই সকাল থেকে স্টেডিয়ামের আসপাশ জুড়ে। শুধু কাঠমান্ডু থেকেই নয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে এসেছেন নেপালের বিভিন্ন প্র্রান্ত থেকে। মজার বিষয় হলো কেউ কেউ খানাপিনাও নিয়ে এসেছেন। আর এখানকার হোটেলগুলোর ছিল পোয়াবারো। খোজ নিয়ে জানা গেল কোন ব্যাবসায়ী কোন কিছুর দাম বাড়াননি। চারটার দিকেই গ্যালারি পরিপূর্ণ হয়ে যায়। তখনই সকল গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। স্টেডিয়ামের বাহিরের চত্ত্বরে কয়েকটি জায়ান্ট স্ক্রীন লাগানো হয়। দুটি খোলা জায়গায় থাকলেও একটি জায়ান্ট স্ক্রীন লাগানো হয় প্যান্ডেল করে। যেখানে হাজারখানেক চেয়ারেরও ব্যাবস্থা করা হয়।

১৯৮৪ ও ১৯৯৯ সালের পর তৃতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশীয় অলিম্পিক খ্যাত এসএ গেমসের আয়োজন করেছে নেপাল। তবে এবারের আয়োজনে আগের দুই আসরকেও ছাপিয়ে গেছে। লেজার শো, কালারফুল ডিসপ্লে, অলিম্পিয়ানদের দিয়ে মশাল প্রজ্জ্বলন, মাঠে প্রত্যেক দেশের নামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের মানচিত্রের দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা, আতশবাজি ছটা সবকিছুই ছিল আকর্ষনীয়।

তিন ঘন্টাব্যাপী এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী বান্দারির বক্তব্য ছিল মাত্র ত্রিশ সেকেন্ড। তিন মিনিটের লেজার শো’র কথা থাকলেও হয়েছে প্রায় ছয় মিনিট। দফায় দফায় আতশবাজি বাড়তি আনন্দ দিয়েছে দর্শকদের। সাত দেশের ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে মার্চপাস্ট পর্যবেক্ষণ করেছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট, ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার ইশ্বর তাখাওয়ার ও ক্রীড়ামন্ত্রী জগত বাহাদুর। নেপাল অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট জীবন রাম শ্রেষ্ঠা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরুর ঘোষনা দেন। ক্রীড়াবিদদের পক্ষ থেকে শপথবাক্য পাঠ করান তারকা ক্রিকেটার পরেশ খড়কা এবং কোচদের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টন রেফারি দীপক থাপা।  শেষের দিকে ছিল মিউজিক্যাল পারফরম্যান্স। নেপালে ঐতিহ্যগত নৃত্য থারু ডান্স, লামা ডান্স, নাগার ডান্স ও লাখে ডান্স পরিবেশনায় ভিন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কর্মকর্তা সঞ্জীব শিল্পকার জানালেন, ‘আমরা খুশী। যেমনট্ করতে চেয়েছি ঠিক তেমনটি হয়েছে। ছোট খাটো ভুল ক্রটি থাকবেই। সার্বিক বিবেচনায় আমরা ও আমাদের টিম খুশী। শুধু নেপালবাসী নয়- মনে হচ্ছে অতিথিদেরও আনন্দ দিতে পেরেছি।’

Share this post

scroll to top