পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের কাসুরে ছয় বছরের শিশু জয়নাব আনসারি ধর্ষণ ও হত্যায় একজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আজ বুধবার লাহোরের কোট লাখপাট কারাগারে ইমরান আলী নামের ওই হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ফাঁসি কার্যকরের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন জয়নাবের বাবা আমিন আনসারি। চোখের সামনে মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর হতে দেখেছেন তিনি।
চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি বাড়ির পাশে থেকে নিখোঁজ হয় ছোট্ট জয়নাব। কোরআন শিখতে যাচ্ছিল সে। ৯ জানুয়ারি একটি আবর্জনার স্তূপ থেকে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। হত্যার আগে ধর্ষণ করা শিশুটিকে। তার নিথর মুখে তীব্র যন্ত্রণার ছাপ ছিল। এ ঘটনার পর ‘জাস্টিস ফর জয়নাব’দাবিতে ১০ জানুয়ারি থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে সেখানকার মানুষ। ‘হ্যাশট্যাগ জাস্টিস ফর জয়নাব’ লিখে প্রতিক্রিয়া জানান জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ও ক্রিকেট তারকারাসহ বিভিন্ন অঙ্গনের মানুষ।
অপরাধীর খোঁজ পেতে এক কোটি রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। জয়নাবের লাশ যেখানে পাওয়া যায়, সেখানে একটি খালি বাক্স পান তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ফরেনসিক পরীক্ষার সূত্র ধরে ২৪ জানুয়ারি ইমরান আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে দোষী সাব্যস্ত হন ২৩ বছরের ইমরান আলী। ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলেও তা নাকচ হয়। আজ তাঁর ফাঁসি কার্যকর করল লাহোর। এ সময় জয়নাবের বাবাসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
ভয়ংকর এক হত্যাকারী ইমরান আলী। জয়নাবকে হত্যার আগে বিভিন্ন সময় আরও ছয় শিশুকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।
মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জয়নাবের বাবা আমিন আনসারি। তিনি বলেন, ‘আমি নিজের চোখে তাঁর ভয়ংকর পরিণতি দেখেছি। তাঁকে ফাঁসি কাষ্ঠে নেওয়া হয়। এক ঘণ্টা ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়।’ আমিন আনসারি এর আগে জনসম্মুখে এই ফাঁসি কার্যকরের জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে লাহোর হাইকোর্টে তা নাকচ হয়ে যায়।
আমিন আনসারি জানান, বেঁচে থাকলে এখন জয়নাবের বয়স হতো সাত বছর দুই মাস।