শেষতম দীপটিও নিভে গেল। মালয়েশিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল সুমাত্রা প্রজাতির গন্ডার। ক্যান্সার নিয়ে ইমান নামে সুমাত্রা গন্ডারটি একাই স্বজাতিকে আগলে রেখেছিল। কিন্তু মারণরোগের সঙ্গে যুদ্ধে সে হার মানল। শনিবার বোর্নিও দ্বীপে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল বছর পঁচিশের স্ত্রী গন্ডারটি। এর আগে তার সঙ্গী, মালয়েশিয়ার শেষতম পুরুষ গন্ডারটির মৃত্যু হয় মে মাসে। তারপর থেকে একাই দিন কাটিয়েছে ইমান। তার মৃত্যুতে সুমাত্রা প্রজাতির গন্ডার এশিয়ার এই দ্বীপ দেশ থেকে হারিয়ে গেল।
ইমান মালয়েশিয়ার সাবা পর্যটন বিভাগের অধীনে ছিল। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। সাবার পরিবেশ দপ্তরের মন্ত্রী ক্রিস্টিন লিউ বলছেন, ‘ইমানকে আমরা ২০১৪ সালে এনেছিলাম। তখনই ওর জরায়ুকে টিউমার ছিল। তারপর থেকে এখানে খুব যত্নে রাখা হয়েছিল ওকে। যতটা সম্ভব ভালোভাবে ওর চিকিৎসাও হয়েছে। ওর মৃত্যু স্বাভাবিক। তবে ইমান কিছুটা আতঙ্কে ছিল বলেও চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন।’
সুমাত্রা প্রজাতির গন্ডার একসময়ে গোটা এশিয়াতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের সংখ্যা কমতে থাকে। এখন তাদের সংখ্যা মেরেকেটে শ’ খানেক। তার মধ্যে জন্মস্থল সুমাত্রাতেই এদের সংখ্যা তিরিশের বেশি নয়। এর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে পাচারকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মালয়েশিয়ায় গন্ডাররা খুব একটা বংশবৃদ্ধিও করতে পারেনি। কারণ, এদের প্রজনন করানোও বেশ কঠিন বলে জানিয়েছেন পশু বিশেষজ্ঞরা।
বলা হয়, ১০ হাজার বছর আগে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া উলি রাইনো অর্থাৎ লোমশ গন্ডারদের কাছাকাছি প্রজাতি এই সুমাত্রার গন্ডাররা। কিন্তু সম্প্রতি তারা বিপন্ন থেকে আরও বিপন্ন হয়ে পড়ছে। ইমানের মৃত্যুর পর মালয়েশিয়ায় শূন্য হয়ে যাওয়ায় মনখারাপ পশুপ্রেমীদের। এতে নেতিবাচক ইঙ্গিতও দেখছেন তারা।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন