জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইরানে আন্দোলকারীদের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের হামলা ও গুলিতে কমপক্ষে ১১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক রিপোর্টে এ দাবি করা হয়।
শনিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সপ্তাহজুড়ে চলা ওই বিক্ষোভের পর ধিরে ধিরে ইরানের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট সেবা ফের চালু করা হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটির দাবি, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিক্ষোভে নের্তৃত্ব দেয়া শতাধিক নেতাকে আটক করা হয়েছে।
ইরানের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খুঁজে খুঁজে এসব নেতাদের আটক করেছে দেশটির এলিট ফোর্স রেভল্যুশনারি গার্ড। খবর বিবিসির।
এদিকে বিক্ষোভের সময় ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ সীমিত করে রাখায় ইরানের আইসিটি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে, ইরানে জ্বালানি তেলের মূল্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত সপ্তাহে শুরু হওয়া বিক্ষোভে মাত্র ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি দেশটির কর্তৃপক্ষের।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির দাবি, এই বিক্ষোভের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও সৌদি আরবের মদদ রয়েছে। ‘শত্রুর ষড়যন্ত্রের’ বিরুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়েছে।
ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র গোলাম হোসেইন ইসমাইলি শুক্রবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, এরই মধ্যে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেয়া ১০০ জনকে আটক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আরো ‘বিপুল সংখ্যক’ বিক্ষোভকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং খুব শিগগিরই তাদেরও আটক করা হবে।
ইরানে গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে তেলের বর্ধিত মূল্য কার্যকর করা হয়। হঠাৎ করেই পেট্রলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ মানুষ।
সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে রাজধানী তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন শহরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এরইমধ্যে সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে, যাতে অংশ নিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। এ বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, পেট্রলে ভর্তুকি বাদ দিয়ে সরকার যে পরিমাণ অর্থ আয় করবে, তা দিয়ে নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা দেয়া হবে।