আমি রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ করেছি : তথ্যমন্ত্রী

হোটেল বয় হিসেবে কর্মরত চলচ্চিত্র পরিচালক অরণ্য পলাশকে বুধবার নিজের পক্ষ থেকে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘গন্তব্য’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে গিয়ে নি:স্বপ্রায় চলচ্চিত্র পরিচালক অরণ্য পলাশকে তথ্যমন্ত্রী নিজের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা হস্তান্তর করেন।

এসময় মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি নিজে যখন বিদেশে পড়াশুনা করতাম, তখন হোটেল-রেস্তোরাঁয় কাজ করতাম। অর্থাৎ আমি নিজেও টি-বয়ের কাজ করতাম, সেখানে টি-বয় বলে না, ওয়েটার বলে। এটি বলতে আমার কোনো দ্বিধা নেই যে, আমি সেই কাজ করতাম। আমি বিদেশে অনেক দিন ছিলাম মাস্টার্স ও ডক্টরেট করার জন্য। সেখানে অনেক দিন কাজ করেছি, মাসের পর মাস। কোনো কাজই অসম্মানের নয়।’

‘অরণ্য পলাশের এই পরিস্থিতি দেখে আমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, সচিব সবার সাথে আলোচনা করেছি যে তাকে আমরা কোনোভাবে সহায়তা করতে পারি কি না’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে তাকে ডেকেছি ব্যক্তিগতভাবে আমার পক্ষ থেকে সহায়তা করার জন্য। কারণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহায়তা করতে হলে একটা প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে হয়। আপনারা জানেন, সরকার যে অনুদান দেয়, সেটার একটা কমিটি আছে। সেই কমিটির মাধ্যমে অনুদান অনুমোদিত হতে হয়। কমিটির সাথে আমি কথা বলবো, তার এই চলচ্চিত্র যাতে মুক্তি পায়, সেজন্য আরও কী খরচ দরকার, আর কী সহায়তা দরকার, কমিটির সাথে সেটি আলোচনা করবো।’

অরণ্য পলাশকে উদ্দেশ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার মনে কষ্ট পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’

‘আমি আবারও বলবো, কোনো কাজই কিন্তু অসম্মানের না, সব কাজই সম্মানের এবং সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কাজকে, কোনো পেশাকে অসম্মানিত করে কোনো কিছু বলা কারো উচিত নয়। সব মানুষ সম্মানের, সব কাজ সম্মানের,’ যোগ করেন তিনি।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও চলচ্চিত্র) মো. মিজান-উল-আলম, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার এবং ‘গন্তব্য’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক এলিনা শাম্মীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয় যে সিনেমা বানাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে অরণ্য পলাশ এখন জীবিকার তাগিদে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ করছেন।

খবরে বলা হয়, বাবার পেনশনের টাকা, জায়গা-জমি, স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে ৭০ লাখ টাকায় ‘গন্তব্য’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন তিনি।

চলচ্চিত্র নির্মাণ করে লগ্নিকৃত টাকা তুলতে না পেরে চাকরির আশায় নানাজনের কাছে ঘুরে ব্যর্থ হয়ে মাস দুয়েক আগে মিরপুরের একটি রেস্তোরাঁয় ওয়েটারের কাজ নিয়েছেন অরণ্য পলাশ। সূত্র : ইউএনবি

Share this post

scroll to top