লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্র (Lauchapra Picnic Spot), জামালপুর জেলা সদর থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তরে বকশীগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। বকশীগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে পাকা রাস্তায় ১০ কিলোমিটার উত্তরে এগোলেই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে প্রায় ১০ হাজার একর জায়গা জুড়ে বিশাল পাহাড়ি এলাকা যার পুরোটাই গারো পাহাড়। আর এই গারো পাহাড়ের কোলেই গড়ে উঠেছে লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্র।
জামালপুর জেলার বক্সীগঞ্জ এর লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্রে বেড়াতে গেলে এমন কিছুর সন্ধান পেতে পারেন। চারিদিকে গারো পাহাড়ের সবুজ বন। পাহাড়ের গা বেয়ে আঁকা বাঁকা একটি সিঁড়ি উঠে গেছে একেবারে চূড়ায়। গারো পাহাড়ের ১৫০ ফুট উপরে নির্মিত ৬০ ফুট উঁচু টাওয়ারে উঠলেই চোখের সামনে চলে আসবে দিগন্ত বিস্তৃত সারি সারি সবুজ পাহাড়-টিলা। ওয়াচ টাওয়ার থেকে তাকালে চারিদিকে সবুজ ছাড়া কিছুই আর চোখে পড়েনা। চারিদিকটা যেন ছবির মতো। চোখে পড়বে সীমান্তের ওপারের মেঘালয় রাজ্যের সুবিস্তৃত পাহাড় ছাড়াও তুরা জেলার পাহাড়ি ছোট্ট থানা শহর মহেন্দ্রগঞ্জ। লাউচাপড়ার এ পাহাড় বেড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে নিচে নেমে এসে বসতে পারেন লেকের ধারে। সবুজ ঘাসের মাঝে কৃত্রিম লেকটি বেশ সুন্দর
লাউচাপড়ার পাহাড়ি এলাকায় হিংস্র কোনও প্রাণী নেই। তবে ধানী মৌসুমে সীমান্তের ওপারের গভীর পাহাড় থেকে নেমে আসতে পারে বন্য হাতির দল। এখানে আছে নানা জাতের পাখি। চোখে পড়বে কাঠ ঠোঁকরা, হলদে পাখি, কালিম পাখিসহ অসংখ্য পাখি।
প্রবেশ মূল্য
লাউচাপড়া প্রবেশ ফি ২০ টাকা।
যাওয়ার উপায়
লাউচাপড়া অবকাশ কেন্দ্র জামালপুর জেলার অধীনে হলেও যাওয়ার সহজপথ হলো শেরপুর হয়ে। ঢাকা থেকে সরাসরি শেরপুরে যায় ড্রীমল্যান্ড পরিবহনের বাস। ভাড়া ১১০ টাকা। ড্রীমল্যান্ড স্পেশালে ভাড়া ১৪০ টাকা। শেরপুর থেকে বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, অটোরিক্সা বা ভ্যানে শ্রীবর্দি কর্ণজোড়া হয়ে যাওয়া যায় লাউচাপড়া। শেরপুর থেকে লাউচাপড়ার দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। শেরপুর থেকে বাসে বকশীগঞ্জের ভাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা। সেখান থেকে রিকশা কিংবা ভ্যানে লাউচাপড়ার ভাড়া জনপ্রতি ২০-২৫ টাকা।
ট্রেনে যেতে চাইলে, আপনাকে ঢাকা থেকে ট্রেনে জামালপুর জেলা শহরে যেতে হবে প্রথমে। সেখান থেকে সিএনজি বা অটোয় বকশীগঞ্জ হয়ে লাউচাপড়ায় যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন
পর্যটকদের কথা ভেবে জামালপুর জেলা পরিষদ ১৯৯৬ সালে ২৬ একর জায়গা জুড়ে গারো পাহাড়ের চূড়ায় নির্মাণ করেছে পিকনিক স্পট ‘ক্ষণিকা’। এখানে রাতে থাকার জন্য রয়েছে জেলা পরিষদের ডাকবাংলো। এখানে থাকতে গেলে আগে থেকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। যোগাযোগ করতে হবে প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, ফোন – ০৯৮১-৬২৭১৬, ০৯৮১-৬৩৫১৪, ০৯৮১-৬৩২৪০
এছাড়া ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল রিসোর্ট ‘বনফুল রিসোর্ট’। এখানে আপনি আধুনিক সব সুযোগ সুবিধাই পাবেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে এখানে নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। এই রিসোর্টে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ছাড়াও রয়েছে সাধারণ কক্ষ। রিসোর্টে নিজস্ব বাবুর্চি দিয়ে রয়েছে রান্নার ব্যবস্থা।