পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানবিক আচরণ অন্য অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের জন্য রোল মডেল হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
নিউইয়র্কে বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে শেখ হাসিনার এ বৈঠক হয়।
শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও সব ধরনের সহযোগিতার কথাও বলেছেন জাতিসংঘ মহাসিচব বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পূর্ণ সমর্থন ও সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে এ বৈঠক হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব তার ভালোবাসার কথা তিনি তুলে ধরেছেন। শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, তাদের আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
মহাসচিবের দায়িত্ব পাওয়ার আগে ২০০৫ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ছিলেন গুতেরেস। সেই সময় তিনি বাংলাদেশ সফর করেন।
আর জাতিসংঘ মহাসচিব হওয়ার পর চলতি বছর আবারও তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে তাদের দুর্দশার কথা নিজ কানে শোনেন।
মিয়ানমারের নির্মূলের শিকার এ জনগোষ্ঠীকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়ায় গুতেরেস বরাবরই বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার প্রশংসা করে আসছেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও জাতিসংঘ মহাসচিব শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকৃত অর্থেই লক্ষণীয় ও শিক্ষণীয়।
গত বছরের আগস্টের পর রাখাইনে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নির্মূল অভিযান শুরু হলে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আসা আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গার ভার বাংলাদেশ বহন করে চলেছে কয়েক দশক ধরে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে গত বছরের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করলেও এখনও প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করার ওপর জোর দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় শেখ হাসিনাকে নেতৃত্ব ধরে রাখারও অনুরোধ করেছেন তিনি।
শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।