স্ত্রী ও ৬ মাসের শিশু কন্যাকে হত্যার দায়ে সিরাজুল হক নামের একজনকে ফাঁসি ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বুধবার বিকেলে এ আদেশ দিয়েছেন পিরোজপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সামছুল হক ।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সিরাজুল হক মঠবাড়িয়া উপজেলার উত্তর মিরুখালী গ্রামের মৃত জবেদ আলী আকনের পুত্র। পিরোজপুর আতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ জহুরুল ইসলাম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে রায়ের সময় আসামি পলাতক ছিলেন।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়ার বাদুরা গ্রামের আব্দুর রব ফরাজীর মেয়ে নাজমার (২৬) সাথে একই উপজেলার উত্তর মিরুখালী গ্রামের মৃত জবেদ আলী আকনের পুত্র সিরাজুল হকের সাথে হত্যাকাণ্ডের ৮ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করে। ঘটনার দেড়মাস পূর্বে সিরাজুল সৌদি আরবে মাত্র তিন মাস থেকে দেশের বাড়িতে ফিরে আসেন। ঘটনার দিন (৯ নভেম্বর/২০০৩ ইং) স্ত্রী নাজমার নামে থাকা পাঁচ কাঠা জমি বিক্রি করে ফের বিদেশে যাবার জন্য স্ত্রী-কন্যাসহ শ্বশুর বাড়ি থেকে সিরাজুল তার ভগ্নিপতি আফজালের বাড়িতে যায়। যাবার সময় শ্বশুর বাড়িতেই ছেলে-মেয়ে রেখে যায়। জমি বিক্রির কথা পাকাপাকি করে নাজমা শিশু কন্যাকে নিয়ে বাপেরবাড়িতে যেতে চাইলে স্বামী সিরাজুল বাধা দেয়। এক পর্যায়ে নাজমা শিশু কন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে পথি মধ্যে কাদের মিলিটারীর বাড়ির সামনে পৌছালে পিছন থেকে এসে ধারাল দাও দিয়ে উপর্যপরী কুপিয়ে স্ত্রী নাজমা ও ছয় মাসের শিশুকন্যা রাবেয়াকে হত্যা করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার পরের দিন ১০ নভেম্বর নিহতের পিতা আ. রব ফরাজী বাদি হয়ে সিরাজুলকে আসামি করে মঠবাড়িয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন । বিজ্ঞ বিচারক অতিঃ জেলা ও দায়রা জজ সাক্ষ্যগ্রহণ এবং অভিযোগ পত্রসহ সকল কাগজ পত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আসামির অপরাধ সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সিরাজুল হককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন এবং একই সাথে পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দন্ডিত করেন।
সরকার পক্ষের সহকারি পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ জহুরুল ইসলাম এবং আসামির পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত অ্যাডভোকেট মোঃ গোলাম রব্বানী মামলাটি পরিচালনা করেন।