ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই স্যাটিসফাইড : বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব

মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে মোহাম্মদ শফিউল আলমের সোমবারই ছিল শেষ কর্মদিবস। চার বছর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর তিনি মঙ্গলবার থেকে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের ‘বিকল্প নির্বাহী পরিচালক’ হিসেবে যোগ দিচ্ছেন। নতুন দায়িত্ব নিতে রাতেই তিনি ওয়াশিংটনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছেন। এরআগে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের বিকল্প পরিচালক হিসেবে তাকে তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

অন্যদিকে নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে যোগ দিচ্ছেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শেষ কর্মদিবসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে যথারীতি সচিবালয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলন করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর মোহাম্মদ শফিউল আলমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। সে হিসেবে তিনি চার বছর দায়িত্ব পালন করেছেন সচিব হিসেবে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে তিনি বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের বিকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে আমার শেষ সেশন ছিল তাই মন্ত্রিসভা আমাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে। তিনি বলেন, যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শুরুর আগে আমাকে ও অবসরে যাওয়া আইন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (লেজিসলেটিভ) শহীদুল হককে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। শহীদুল হক বুধবার থেকে অবসরে যাচ্ছেন। তাকেও ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

সচিব বলেন, আমি আজ ঠিক চার বছর পূর্ণ করলাম। ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর শুরু করেছি, ২৮ অক্টোবর শেষ করলাম। সবার দোয়ায় আমি আজ ওয়াশিংটন যাচ্ছি। আজ রাতেই ইনশাআল্লাহ রওনা দেব। কাজের সময়ে আমি সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছি। আপনাদের সাথে একসঙ্গে কাজ করেছি, খুব স্বাচ্ছন্দ্য ফিল করেছি। আমরা যে সরকারি চাকরি করি আর আপনারা যে বেসরকারি খাতে চাকরি করেন, কাজ করতে এসে সেটা মনে হয়নি। মনে হয়েছে আমরা এক পরিবারের লোক। এরপরও আমাদের পক্ষ থেকে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়ে থাকে, কোনো কিছুর ব্যত্যয় হয়ে থাকে, আপনারা নিজগুণে ক্ষমা করে দেবেন। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন। সবাই ভালো থাকবেন।

চার বছরে ভালো ও খারাপ অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের ক্যাবিনেটের অনেকগুলো অর্জন আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজে খুবই স্যাটিসফাইড। আপনারা বুঝতে পারেন কিনা জানি না। আমাদের অনেক বড় একটি পরিবর্তন হলো- আমরা দিনের কাজ দিনে শেষ করি। আজকে ক্যাবিনেট মিটিং আজকে প্রসিডিং সই টই হয়ে শেষ। অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করে চূড়ান্ত। যদি বেশি বড় হয় তবে হয়তো রাতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইল পাঠাই রাতেই তিনি সই করে দেন। শুধু ক্যাবিনেট মিটিং না, ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি, অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি, অন্যান্য যে মন্ত্রিসভা কমিটিগুলো আছে সবগুলোতে আমরা এই নিয়মটা অনুসরণ করি। সমন্বয় সভা ও বিভাগীয় কমিশনারদের সঙ্গে সভাসহ আমাদের নিজস্ব যে মিটিং আছে সেগুলো একইভাবে করি। হয়তো আমরা ১০টায় মিটিং করলাম, ১২/১টার দিকে আমরা রেজুলেশন শেষ করে দেই। এই চর্চা আমরা অব্যাহত রেখেছি। এটাতে আমরা নিজেরা স্যাটিসফাইড (সন্তুষ্ট) যে, কাজটা শেষ করে দিলাম। পেন্ডিং থাকল না।

বিদায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত কয়েক বছরে আমাদের যত রকমের প্রোডাক্টস আছে যেমন- এপিএ (বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি), এনআইএস (জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল), সিটিজেন চার্টার, আরটিআই- এগুলোর ব্যাপারে আমরা ডকুমেন্টশন করেছি। সবগুলোর ব্যাপারে গাইডলাইন, গাইডবুক দেয়া আছে। কেউ যদি কোনো বিষয়ে বুঝতে চায়, তবে আমাদের গাইডলাইন অনুসরণ করলে সুবিধা হবে। সবকিছু ডকুমেন্টেড আছে, আমাদের ওয়েবসাইটেও দেয়া আছে। তিনি বলেন, এনআইএস ও এপিএতে আমরা গ্রাসরুট পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। উপজেলা পর্যায়ে এপিএ হয়, এটাতে আমরা ভালো ফল পেয়েছি।

Share this post

scroll to top