ক্রিকেটাররা চাইলে বোর্ড আলোচনায় বসবে : সুজন

ক্রিকেটের চলমান সঙ্কট দুর করতে ক্রিকেটাররাদের সাথে আলোচনায় বসতে রাজী আছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। এ জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

আজ বুধবার সকালে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটাররা চাইলে বোর্ড আলোচনায় বসবে।’ বিকেল ৫টা পর্যন্ত আলোচনার অপেক্ষা করবেন বলেও জানান তিনি।

বিসিবি সিইও বলেন, তামিমের সাথে কথা হয়েছে, তাদের বলা হয়েছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য।

তিনি বলেন, সব দাবি আর্থিক, তাই সমাধান সম্ভব।

গত সোমবার বিকেলে বেতন ও ভাতা বৃদ্ধিসহ ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেয় সাকিবরা। মিরপুরে শেরে-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম সংলগ্ন অ্যাকাডেমি মাঠে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি তুলে ধরেন। এতে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমসহ ৩০ জন ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের সাথে ছিলেন না মাশরাফি মর্তুজা। পরে ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, ক্রিকেটারদের দাবি আদায়ে সাথেই আছেন তিনি।

এমন সময়ে এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে যখন আগামী মাসেই একটি দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট সিরিজ খেলতে ভারত যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলের।

এ ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে জরুরি বৈঠকে বসেন বিসিবির কর্মকর্তারা। পরে সংবাদিকদের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেন, সাকিব-তামিমদের আচরণে আমরা অসন্তুষ্ট। এটা মোটেও কাম্য নয়। আমরা এসব বিষয়ে কিছুই জানি না। তারা আমাদের সাথে (দাবিগুলোর বিষয়ে) আলোচনা করতে পারত। তাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। অতীতে তাদের সব চাওয়া আমরা পূরণ করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ খেলা বন্ধ করে দেয়া একটা চক্রান্ত। জিম্বাবুয়ের মতো বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিশ্বে নিষিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চলছে। কারা এর সাথে জড়িত আমরা তা জানি। তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমার মতে, দু’একজন ক্রিকেটার এতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাকিরা না বুঝে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।

ক্রিকেটারদের ১১টি দাবি –

১. ক্রিকেটারদের হাতে ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ বা কোয়াব-এর নেতৃত্ব নির্বাচনের অধিকার দেয়া।

২. ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে সুনির্দিষ্ট পারিশ্রমিক এবং অন্যান্য বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয়া।

৩. এবারের আসরের পর থেকে পূর্বের নিয়মে বিপিএল আয়োজন এবং দেশীয় ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি।

৪. প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের ম্যাচ ফি ১ লাখে উন্নীত করা এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন ৫০% বৃদ্ধি । ১২ মাস কোচ, ট্রেনিং এর নিশ্চয়তা।

৫. প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে মানসম্মত বল ব্যবহার, দৈনিক ভাতা বাড়ানো, ক্রিকেটারদের যাতায়াতের প্লেন ভাড়া, হোটেলে জিম ও সুইমিংপুল এবং ক্রিকেটারদের বাস উন্নয়ন করার দাবি।

৬. কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০ করা এবং একইসাথে চুক্তির আওতায় বেতন বৃদ্ধি করা।

৭. মাঠকর্মী, স্থানীয় কোচ, আম্পায়ার, ফিজিও ও ট্রেইনারদের সম্মানী বৃদ্ধি করা।

৮. প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের মতই আরো একটি করে ৫০ ওভার ও ২০ ওভারের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন।

৯. ঘরোয়া ক্রিকেটের জন্য নির্ধারিত সময়সূচি।

১০. প্রিমিয়ার লীগের বকেয়া টাকা সময়মত পরিশোধ করা।

১১. যেকোন দুটি বিদেশী ফ্রাঞ্চাইজি লীগ খেলার বিধিনিষেধ শিথিল করা।

Share this post

scroll to top