সিরিয়ার ইদলিবে বাশার আল-আসাদ সরকারের অভিযান বন্ধ করতে পারায় প্রশংসায় ভাসছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ইদলিবের সাধারণ মানুষ এখন এরদোগানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
সিরিয়ায় আসাদবিরোধীরা বর্তমানে ইদলিবে অবস্থান করছে, সেখানে প্রায় ৩০ লাখ সাধারণ মানুষের বসবাস। সম্প্রতি আসাদ সরকার ও মিত্র রাশিয়া এবং ইরান সেখানে অভিযানে অগ্রসর হয়।
কিন্তু বাদসাধে তুরস্ক। তুরস্কের বক্তব্য- ইদলিবে অভিযান চালালে সেখানে অবস্থানরত প্রায় ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটবে। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হবে এবং তুরস্ক ও ইউরো শরণার্থীর ঢল নামবে। সে কারণে তুরস্ক এই অভিযানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান অভিযানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বক্তব্য রাখেন এবং ইদলিবের কাছাকাছি সেনা সমাবেশ ঘটান। এ নিয়ে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে তুর্কি সরকার দফায় দফায় আলোচনায় বসে।
সর্বশেষ সোচিতে এরদোগান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে সমঝোতা হয়। ইদলিবে হামলা না চালিয়ে সেখানে একটি নিরাপদ অঞ্চল গড়ার জন্য দুই নেতা সম্মত হয়। এরদোগানের এ প্রচেষ্টার ফলে ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে ইদলিব।
এরপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন নেতারা এবং ইদলিববাসীরা এরদোগানের প্রশংসা করছেন। ইদলিবের বাসিন্দা আহমেদ জারজুর তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনাদলু এজেন্সিকে বলেন, আমরা তুরস্ককে বিশ্বাস করি। তুরস্ক যখন এই এলাকায় শক্তিশালী এবং সক্রিয় তখন আমরা ভালো থাকি। আমরা আমাদের এলাকায় ফ্রি সিরিয়ান আর্মি (এফএসএ) ও তুরস্কের পতাকা উড়িয়েছি।
উল্লেখ্য, ফ্রি সিরিয়ান আর্মি বা এফএসএ হচ্ছে সিরিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী একটি সংগঠন; যাদের প্রায় ৫০ হাজার সক্রিয় যোদ্ধা রয়েছে। সরাসরি তুরস্কের সমর্থনে এই সংগঠন পরিচালিত হয়।
ইদলিবের একটি হাসপাতালের ম্যানেজার আব্দুস সালাম হাসান বলেন, আমরা তুরস্কে এই অঞ্চলে সহযোগিতার অনুরোধ করছি। তারা যেন আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে।
এরদোগান ও পুতিনের এই সমঝোতার প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব এন্টনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, সোমবার সোচিতে পুতিন ও এরদোগানের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে এর মাধ্যমে ৩০ লাখ মানুষের জীবনরক্ষা হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব এ জন্য এরদোগান ও পুতিনের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।