রাণীশংকৈল, প্রতিনিধিঃ (ঠাকুরঁগাও) : ঠাকুরঁগাওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা পৌর শহরের মুল কবরস্থানের জমিতে শৌচারগার নির্মাণের কাজ এখনও চলছে। যদিও এর প্রতিবাদে নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবিতে গত ৭ অক্টোবর উপজেলার ৭টি সামাজিক সংগঠন – ষড়জ শিল্পী গোষ্ঠী, যুব সংঘ,উদীচি, শান্তিপুর ক্রীড়া সংস্থা, কেন্দ্রীয় টাউন ক্লাব, জাতীয় মানবধিকার সংস্থা, সেনা কল্যাণসহ কিছু মসজিদ কমিটির সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি আফরিদার মাধ্যমে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। অভিযোগ স‚ত্রে জানা যায়, শতাব্দী প্রাচীন শিবদিঘী পাচঁপীর কবরস্থান। এখানে পৌরশহরের মৃত ব্যক্তিদের দাফন করার একমাত্র স্থান। এখানে সম্প্রতি পৌরসভার অধীনে পুরনো কিছু কবর ভেঙ্গে শৌচারগার ম্যানহোল বাথরুম নির্মাণ করা হচ্ছে যা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে চরম জঘন্যতম কাজ বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ব্যপারে অভিযোগকারী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রুকুনুল ইসলাম ডলার বলেন, জীবনের শেষ ঠিকানা কবরস্থানে শৌচাগার বানানোর মত জঘন্য কাজ আর নেই। ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি অপমানজনক একটি অধ্যায়। এ কাজ বন্ধের দাবী আমরা জানিয়েছি। যদি বন্ধ না হয় তবে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মস‚চি হাতে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলাফল কি হচ্ছে তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। কিন্তু পাঁচপীর গোরস্থানে শৌচারগার নির্মাণ তদন্তের ফাইল এখনও ঘুরছে। আমরা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
সংশ্লিষ্ট ভুমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা জাহেরুল ইসলাম বলেন, পৌর শহরের মহলবাড়ী মৌজার ১৩২ নং দাগের রেকর্ডীয় লাইক জঙ্গলের ৯ একর ৯০ শতক জমির ৪ একর ৯০ শতক জমি হাসপাতালের ভিতরে রয়েছে বাকী ৫ একর জমি কবরস্থান হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এ জমির উপরে শৌচারগার নির্মাণ করা হচ্ছে মর্মে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ হয়েছে। এ কারণে ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশে উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার দিয়ে জমিটি মাপা হয়েছে। শৌচারগারটি কবরস্থানের জমিতেই নির্মাণ হচ্ছে।তিনি আরও বলেন প্রতিবদেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবরে জমা দেওয়া হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কবরস্থানের সন্নিকটেই নির্মাণ করা হচ্ছে শৌচারগারের বিশাল হাউজ (ম্যানহোল) পাশে বাথরুমের বিল্ডিং আর তার পাশেই মাটি থেকে রডের পিলার উঠানো হচ্ছে।এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, শৌচাগারটি কবরস্থানে নয় ,খাস জমিতেই নির্মাণ হচ্ছে।
জাইকার নগর প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ নির্মাণ কাজ পৌরসভা ও জাইকার কাছে ২ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় চুক্তি করেছেন মাহিবুল এন্টারপ্রাইজ নামক এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। মেয়রের নির্দেশমতে আমরা কাজ করছি। তবে কবরস্থানের জমিতে আমাদের প্রকল্পের স্থাপনা হচ্ছে । এ প্রকল্পের শৌচাগার নির্মাণ নিয়ে আপত্তি তুলে জেলা প্রশাসকের বরাবরে অভিযোগ হয়েছে তাও শুনেছি। মেয়র আমাদের যেখানে জায়গা দিবে আমরা সেখানেই করব।
পৌর মেয়রের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে সিনিয়র সহকারি কমিশনার (ভ’মি) সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন, আগামী রবিবার সরেজমিনে আমি নিজে তদন্ত করব, তবে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে মেয়র মহোদয়কে নির্মাণ কাজটি বন্ধ রাখার বলা হয়েছে।