নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রচারিত দুই বাংলার শীর্ষ জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল ‘জি বাংলা’ কর্তৃক আয়োজিত জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘মিরাক্কেল’- এ চান্স পেয়েও পাসপোর্টের দালালকে ঘুষ দিতে না পারায় কলকাতা গিয়ে মিরাক্কেলে অংশগ্রহণ করা অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পরেছে ময়মনসিংহের ছেলে নাঈমের জন্য।
সূত্র জানায়, ভারতের কলকাতা থেকে প্রচারিত বাংলাদেশে অন্যতম শীর্ষ জনপ্রিয় চ্যানেল জি বাংলার আয়োজনে মিরাক্কেলের ঢাকা অডিশন গত ২৭,২৮ সেপ্টেম্বর গুলশানে এমানুয়েল বাংকুয়েট হলে(ঢাকা নিউ হল) অনুষ্ঠিত হয়। মিরাক্কেলের ডিরেক্টর শুভংকর চট্টোপাধ্যায়ের নিজ তত্বাবধানে পরিচালিত এই অডিশনে প্রায় সহস্রাধিক প্রতিযোগির মাঝে দুইদিন ব্যাপী দুই ধাপের বাছাইয়ে প্রথম দশে সিলেক্টেট হয় ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের ছেলে আবদুল্লাহ আল নাঈম। পরে বাছাই হওয়া প্রত্যেক বাংলাদেশীকে মিরাক্কেল কর্তৃপক্ষ ১৫ দিনের মধ্যে জরুরী ভাবে পাসপোর্ট রেডি করতে বলে। তাই নাঈম ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ইমার্জেন্সি পাসপোর্টের আবেদন ফরম জমা দেয় inrollment ID : 610100000806596; Date of birth : 04-02-1999) । যার সম্ভাব্য ডেলিভারির তারিখ জানানো হয় ১০ অক্টোবর।
এদিকে জি বাংলা কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেয়া পনেরো দিনের সময়সীমার আজকেই (১৩ অক্টোবর) শেষ দিন ছিলো। অন্যদিকে বাকী প্রতিযোগিদের পাসপোর্ট প্রস্তুত হয়ে যাওয়ায় মিরাক্কেল কর্তৃপক্ষ কয়েকদিনের মধ্যেই ঢাকা ত্যাগ করতে পারে। তাই
আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে না পেলে চান্স পাওয়া সত্ত্বেও ভালুকা থেকে নাঈমের আর মিরাক্কেলে অংশগ্রহণ সম্ভব নাও হতে পারে।
এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী নাঈম এই প্রতিবেদককে বলেন, “ঢাকায় শুধুমাত্র নিজের চেষ্টায় অনেক কষ্টে টিউশনি করে আবাসন ও পড়াশুনার খরচ জোগার করাটাই আমার জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। আর পাসপোর্ট করতে গিয়ে অনেক দালালই আমাকে টাকার বিনিময়ে সাহায্য করতে চেয়েছে। কিন্তু ইমার্জেন্সি পাসপোর্টের মূল টাকাটাই আমাকে বিভিন্ন ভাবে ধার করে ম্যানেজ করতে হয়েছে। এখন এর উর্ধ্বে গিয়ে বাড়তি ঘুষের টাকা জোগার করা আমার পক্ষে একেবারেই অসম্ভব। যদি সম্ভব হতো, তাহলে হয়তো ভেবে দেখা যেতো। আমি আরো অনেককেই দালালের মাধ্যমে কাজ করাতে দেখেছি। এবং এতে ভালো কাজও হয়। কিন্তু আমার তো সামর্থ্য নেই।”
এব্যাপারে ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এডি মেহেদী হাসান জানান, ‘আমরা শীঘ্রই ওনার পাসপোর্ট দেয়ার ব্যবস্থা করবো। ওনাকে অফিসে আসতে বলেন। ওনার ব্যাংক চালান ফরমের নামের সাথে আবেদন ফরমের নামের মিল নো থাকায় এ সমস্যা হয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, মীরাক্কেল ভারতের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন রিয়েলিটি অনুষ্ঠান। জি বাংলায় প্রচারিত এই স্ট্যান্ডআপ কমেডি রিয়েলিটি শো-এর উপস্থাপক মীর। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠানটি ভারত, বাংলাদেশ এবং সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষার
মানুষের অন্যতম জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হিসাবে স্থান করে নিয়েছে। এই অনুষ্ঠানটি এ পর্যন্ত ৯টি সিজন অতিক্রম করেছে। আর সিজন৫ থেকে এখানে ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও প্রতিযোগী নেয়া শুরু হয়। আর এতে করে এর জনপ্রিয়তা আরো তুঙ্গে উঠে যায়। মিরাক্কেলে সিজন৬-এ প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে চ্যাম্পিয়ান হয়েছিলো রাজশাহীর আবু হেনা রনি(২০১২)। বর্তমানে সিজন১০-এর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ময়মনসিংহের প্রতিনিধিত্বকারী এবারই প্রথম প্রতিযোগী হিসেবে আবদুল্লাহ আল নাঈম মিরাক্কেলের বাংলাদেশ পর্ব অতিক্রম করেছে। কিন্তু পাসপোর্ট জটিলতার কারণে তার মূল পর্বে অংশগ্রহণের সম্ভাবনা ধীরে ধীরে ক্ষীণ হয়ে আসছে। তাই নাঈম এ ব্যাপারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করছে।