ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, দোষী সাব্যস্ত হলে অভিযুক্ত ১৯ ছাত্রকে স্থায়ী বহিষ্কার করাসহ ৫ দফা পূরণের নোটিশ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) প্রশাসন। শনিবার সকালে বাংলাদেশ বুয়েটের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার অধ্যাপক ড. মো: সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত আলাদা পাঁচটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়।
নোটিশে জানানো হয়, র্যাগের নামে ছাত্রদের নির্যাতনের ঘটনা সংক্রান্ত অভিযোগ জমাদান ও প্রকাশের জন্য একটি ওয়েব পোর্টাল তৈরি করা হবে। সেখানে যেকোন ছাত্র একটি ফরম-এর মাধ্যমে তার অভিযোগ অনলাইনে জমা দিতে পারবে। অভিযোগসমূহ পর্যবেক্ষণ করে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মাধ্যমে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া সবগুলো হলের প্রত্যেক ফ্লোরে সকল উইং-এর দুইপাশে প্রয়োজনীয় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় দাবির প্রেক্ষিতে বুয়েট প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে যারা আবাসিক হলের সিট দখল করে আছে তাদেরকে অতিসত্বর হল থেকে উচ্ছেদ করে সিট খালি করাসহ ছাত্রসংগঠনগুলোর অফিসরুম বন্ধ করে তা সিলগালা করার জন্য ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ব্যবস্থা নিবেন। রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে উল্লেখিত কাজগুলো শুরু করা হবে। ভবিষ্যতে কোনো সংগঠন ছাত্র রাজনীতি করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি কোনো শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে র্যাগিং বা ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ আসলে তা ডিসিপ্লিনারি কমিটির মাধ্যমে দ্রুত বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
শিক্ষাথীদের তৃতীয় দাবির প্রেক্ষিতে নোটিশে বলা হয়, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা চলাকালীন মামলার সকল খরচ বুয়েট প্রশাসন বহন করবে এবং আবরার ফাহাদের পরিবারকে বুয়েট কর্তৃপক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
চতুর্থ দফা দাবির জবাবে বুয়েট প্রশাসন বলে, গত ৬ তারিখ রোববার দিবাগত রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের ১০১১ কক্ষের আবাসিক ছাত্র আবরার ফাহাদের অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক ঘটনার মামলায় এজাহারভুক্ত ১৯ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হল। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। চলমান তদন্ত শেষে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের পর ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিন্ডিকেটের অনুমোদনের মাধ্যমে দোষীদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে। এছাড়া আদালতের বিচারে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হলে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।
পঞ্চম দফা দাবির ক্ষেত্রে বুয়েট প্রশাসন জানায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসির সাথে বৈঠকের পর বুয়েট প্রশাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট পাঁচ দফা দাবি পূরণের দাবি জানায়। পরে শনিবার সকালে শিক্ষার্থীদের দাবিকৃত পাঁচ দফা দাবি পূরণ করে নোটিশ আকারে প্রকাশ করে বুয়েট প্রশাসন।