একটি শিশু হাসপাতাল হবে। এর জন্য ৩০ কোটি টাকা তৈরিও আছে। দরকার শুধু শহরের মধ্যে প্রধান সড়কের পাশে এক একর জায়গা। জায়গা পেলেই নির্মাণকাজ শুরু করা যেত। কিন্তু দুই বছরের বেশি সময় এই জায়গা কর্মকর্তারা খুঁজে বের করতে পারেননি। আগামী বছরের মধ্যে জায়গা না পাওয়া গেলে বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে। অর্থাৎ পুরো প্রকল্পটিই বাদ হয়ে যাবে।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পর্যাপ্ত অর্থ হাতে থাকার পরও মাত্র এক একর জায়গা খুঁজে বের করতে ব্যর্থ হওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহে। কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার কারণে শিশু হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ ঝুলে গেছে। খবরে এসেছে, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এই প্রকল্পের মূল দায়িত্বে রয়েছে। তবে স্থান খোঁজার দায়িত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ সার্কেল। কর্মকর্তারা কয়েকটি জায়গা দেখলেও এখন পর্যন্ত কোনো স্থান নির্ধারণ করতে পারেননি। ২০১৭ সালের মার্চে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অর্থ বরাদ্দের অন্যতম শর্ত ছিল হাসপাতালটি শহরের মধ্যে এবং প্রধান সড়কের পাশে এক একর জায়গায় নির্মাণ করতে হবে। এ জন্য দ্রুত গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরুর কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু শহরের ভেতরে এখন পর্যন্ত স্থান নির্ধারণ করতে না পারায় নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
প্রকল্প অনুযায়ী, হাসপাতালটি ১০০ শয্যা দিয়ে শুরু হওয়ার কথা। পরে ধীরে ধীরে এর সেবার পরিধি বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। কিন্তু এখনো এর নির্মাণকাজই শুরু করা যায়নি। এতে শহরের বাসিন্দা এবং অন্য হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে হতাশা কাজ করা স্বাভাবিক। কারণ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ জেলার অন্য সব হাসপাতালে সারা বছরই শিশু রোগীর চাপ বেশি থাকে। চিকিৎসকদের সক্ষমতার দুই-তিন গুণ বেশি শিশু রোগী দেখতে হয়। শিশু বিভাগের শয্যা পাওয়া যায় না। শিশুদের দিকে অনেক সময় মনোযোগ দিয়ে চিকিৎসা দেওয়াও তাঁদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। শিশুদের জন্য বিশেষায়িত এই নতুন হাসপাতালটি হলে তারা আরও ভালো সেবা পেত। স্বতন্ত্র একটি শিশু হাসপাতাল নির্মাণ হলে বাড়তি রোগীর চাপ সামলানো এবং চিকিৎসাসেবার মান বাড়ানো সম্ভব হতো।
এই অবস্থায় ময়মনসিংহের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী বড় শহরে এক একর জমির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না—এই কথা যে কারও কাছে বিস্ময়কর মনে হওয়া স্বাভাবিক। যেহেতু জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা দুই বছরের বেশি সময়ের মধ্যে জায়গা খুঁজে বের করতে পারেননি, সেহেতু আগামী এক বছরের মধ্যে তাঁরা তা পারবেন, এমন কথা জোর দিয়ে বলা কঠিন। এ অবস্থায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া দরকার।