একে কন্যাসন্তান। তার উপরে গায়ের রং কালো। কিছুতেই তাকে মনে ধরেনি বাবার। এ নিয়ে মাকেও বিস্তর খোঁটা শুনতে হত। শেষমেশ সাড়ে তিন মাসের মেয়ে ঝিকড়াকে আছড়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে।
উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের খাঁ পাড়ার এই ঘটনায় পুলিশ শিশুটির দেহ ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে। তার বাবা মনিরুলের খোঁজ চলছে। পলাতক মনিরুলের বাবা-মাও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে সোনিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় মনিরুলের। সোনিয়ার বাবা ইসমাইল ঘরামি জানান, বিয়েতে জামাইয়ের চাহিদা মতো গয়না, টাকা দেওয়া সত্ত্বেও আরও টাকার দাবিতে মেয়ের উপরে নির্যাতন চালাত জামাই। কন্যাসন্তানের জন্মের পরে অত্যাচার বেড়েছিল। সোনিয়া বলেন, ‘‘কেন মেয়ে হল, এ জন্য আমাকেই খালি দায়ী করত স্বামী। শ্বশুর-শাশুড়িরও তাতে মদত ছিল।’’ তিনি জানান, শনিবার এ সব নিয়েই ঝগড়াঝাটি চলছিল। সোনিয়াকে চড়থাপ্পড় কষায় মনিরুল। বাড়ি থেকে বের করে দেবে বলে শাসানি দেয়। কথা কাটাকাটির সময়ে হঠাৎই একরত্তি মেয়েটাকে তুলে আছাড় মারে মাটিতে। ‘‘শব্দটুকুও বেরোয়নি মেয়েটার মুখ থেকে, তার আগেই সব শেষ’’— কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন সদ্য সন্তানহারা মা।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার কথা গোপন করতে কাছেই হাসপাতালে গিয়ে মনিরুল বলে, মেয়ে কোল থেকে পড়ে গিয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে কথাটা জানাজানি হয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীরাই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ আসার আগেই অবশ্য শিশুর দেহ ফেলে পালায় মনিরুল আর তার বাবা-মা। সূত্র: আনন্দবাজার