৩৯ বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু পদবঞ্চিত ৮৩৬০ চিকিৎসকের ভ্রমণকাহিনী-পর্ব ৬

প্রতিনিধিদলের পক্ষে – ডা রাফা বিনতে নূর : দেশে জেলা ৬৪, সিভিল সার্জনও ৬৪। আমাদের প্রতিনিধি দলও তাই ৬৪। মেডিকেল কলেজে পড়েছি, তারপর ইন্টার্নশিপ করেছি, তারপর কেউ পোস্টগ্রাজুয়েশন কেউবা চাকরি আর বেশিরভাগই বিসিএস এর জন্য জীবন জলান্জলি দিয়ে দিয়েছে এমন সব প্রতিনিধি। উপজেলার এক্সপোজার বেশিরভাগেরই ওভাবে আলাদা করে নেই।

পরিচিত সরকারি ডাক্তারগণ এবং মিডিয়ার বদৌলতে সবাই কম বেশি জানি উপজেলা পর্যায়ে ভয়াবহ চিকিৎসক সংকটের ব্যাপার। বিচ্ছিন্নভাবে অনেক ঘটনাই জানা যায়। কিন্তু ৬৪ জেলার সম্মিলিত রিপোর্ট কি আছে কারো আছে? হয়ত আছে, কিন্তু তা পাবলিশ হয় না। আমাদের এক্সপেরিয়েন্স তাই ছিল ভয়াবহ।

ভ্রমণকাহিনী

ভ্রমণকাহিনী

প্রতি জেলায় গিয়েই দেখা গেল একটা বড় সংখ্যক চিকিৎসক সংযুক্তিতে অন্যখানে কর্মরত। নতুন নতুন হাসপাতাল স্থাপিত হয়েছে, শয্যা সংখ্যা বেড়েছে। এসবখানে সার্ভিস দেওয়ার জন্য তাল মিলিয়ে বাড়েনি নতুন পদসংখ্যা। ফলে এই ঐ জেলার এখান ওখান থেকে ধার করে এনে সংযুক্তি দেখিয়ে চলে এসব হাসপাতাল। এতে ইউনিয়ন সাবসেন্টার/উপজেলা/ জেলা পর্যায়ে চিকিৎসক ও জনগণ উভয় পক্ষই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে!

ভ্রমণকাহিনী

নির্বাচনের আগেই শুনেছিলাম ১০০০০ চিকিৎসক নির্বাচনের আগেই নিয়োগ হবে। তারপর রেজাল্টের ২ দিন আগেও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা মুরাদ হাসান স্যার বলেছিলেন অন্তত ৭০০০ চিকিৎসক নিয়োগ হবে ৩৯ থেকে। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে কোনটাই সত্য হয়নি।

২০০৯-২০১৮ পর্যন্ত সময়কালে সর্বমোট ২৫ টি মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়েছে ( ১৯ টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ও ৬ টি সেনাবাহিনীর অধীনে)। ৩৩ টি উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স ১০/২০/৩১ শয্যা হতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। ১৭ টি হাসপাতাল ৫০ শয্যা হতে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। ৯ টি জেলা সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা হতে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে।

৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বর্তমানে আছে ৩৪৭ টি। ২০২১ সাল নাগাদ ৩৭৫ টি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

২০১৪ এর পর শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং সেন্টার (১০০ শয্যা), শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনসটিটিউট (৫০০ শয্যা), শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনসটিউট এন্ড হসপিটাল (২৫০ শয্যা) বিশেষায়িত হাসপাতালগুলো স্থাপিত হয়েছে। NITOR এর শয্যাসংখ্যা ২৫০ হতে ১০০০ এ উন্নীতকরণ চলছে। NIKDU ১৫০ হতে ৪০০ শয্যা করার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। NICVD ৪৪০ শয্যা হতে বেড়ে হবে ১২৪৮।

নি:সন্দেহে এগুলো বিশাল বিশাল অর্জন। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য এখনও দেশ ২০০৮ সালের জনবল কাঠামোতেই পরে আছে। সরকারি পর্যায়ে অন্তত ২০০০০ চিকিৎসক অতিসত্ত্বর নিয়োগ প্রয়োজন। অথচ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাক্ষরিত ২০১৭ সালের সেই ১০০০০ চিকিৎসক নিয়োগের সেই গেজেটের বাস্তবায়নই এখনও হয়নি।

আমরা নতুন করে ভাবতে বসলাম ভ্রমণের এক পর্যায়ে। ৩৯ বিসিএস আমাদেরকে আর কিছু না দিক দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভয়াল চিত্রের সাথে পরিচিত করেছে।

ভ্রমণকাহিনী

ভ্রমণকাহিনী

আমরা বিগত ৫ মাসে মন্ত্রণালয়, পিএসসি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সান্নিধ্যে যেভাবে এসেছি তা বছরকে বছর সরকারি চাকুরির পরও সবাই যায়না, যাওয়ার প্রয়োজন পরে না। ছোট মানুষ হলেও আমরা অনেককিছু বুঝতে পারি এখন। আমলাতান্ত্রিক মন্ত্র তন্ত্র যে কতটা ভযাবহ তা বুঝতে পারি। এক অদৃশ্য মায়া যেন। সবখানেই আছে কিন্তু নাগাল আপনি পাবেন না। মায়ার জালে আটকা পরে দায়িত্ব শেষের সময় চলে আসে কিন্তু ভেতর পর্যন্ত জ্ঞান পৌঁছায় না, উন্নয়নও হয় না।

আমরা প্রেস ক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলাম, প্রেস কনফারেন্স করেছিলাম। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য সেক্টরের সাথে প্রত্যক্ষ/পরোক্ষভাবে জড়িত আছেন এমন অনেক ব্যক্তিত্বের সাথে দেখা করার চেষ্টা করেছি। দেশবরেণ্য অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ যারা দেশ নিয়ে ভাবেন তাঁদের সাথেও দেখা করার চেষ্টা করেছি। কিছুক্ষেত্রে সফল হয়েছি। কিছু হইনি। অনেকেই বলেছেন দেখা করেছ কিন্তু বের হয়ে বলা যাবে না, তাই সবার নাম উচ্চারণ করতে পারবনা।

ভ্রমণকাহিনী

ভ্রমণকাহিনী

BMA এর স্যাররা বরাবরই আগলে রেখেছেন আমাদের। অনেকবার অনেক ভুল পদক্ষেপ থেকে রক্ষা করেছেন। শেষ পর্যন্ত কি হবে জানিনা । কিন্তু স্যারদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। বিশেষত ডা ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল স্যারের প্রতি আমরা কর্মীরা আজীবন ঋণী হয়ে থাকব। স্যার না থাকলে হয়ত বহু আগেই আমরা বিপথে চলে যেতাম । স্যার বলেছেন, ২০০০০ চিকিৎসক নেওয়া প্রয়োজন। জনবল কাঠামো পাল্টে পদ সৃজনের চেষ্টা তিনি অনেকদিন ধরেই করছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে ৮৩৬০ নিলেও প্রচুর চিকিৎসক ঘাটতি রয়ে যাবে।

ডা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন স্যার বলেছেন, চিকিৎসক নিয়োগ ও পদ তৈরি দুটোই সময়ের দাবি।

ডা ইকবাল আর্সলান স্যার বলেছেন, পদ তৈরি না হলে নতুন চিকিৎসক আরো নেওয়া সম্ভব হবে না।কিন্তু পদ তৈরি খুব কঠিন কাজ।

প্রফেসর ডা আ ফ ম রুহুল হক স্যার বলেছিলেন, হেল্থে কোন নন ক্যাডার পদই হয় না। এরকম রেজাল্ট দেওয়া ঠিক হয়নি। প্রচুর চিকিৎসক দরকার। স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত করতে হলে এর বিকল্প নেই।

প্রফেসর ডা হাবিবে মিল্লাত মুন্না স্যার বলেছেন, এ দেশে ১ লাখ চিকিৎসক নিয়োগ হওয়া প্রয়োজন যদি স্বাস্থ্য সেক্টরকে অপটিমাম লেভেলে নিতে হয়।

প্রফেসর ডা দীন মোহাম্মদ নূরুল হক স্যার বলেছেন, নন ক্যাডার আবার চিকিৎসক কিভাবে হয়! চিকিৎসক মানেই ক্যাডার। বিশেষ বিসিএস এ এরকম রেজাল্ট ঠিক নয়।

প্রফেসর ডা আবদুল আজিজ স্যার বলেছেন, এভাবে নন ক্যাডার করে রেজাল্ট দেওয়া খুব দু:খজনক। চিকিৎসক সংকট প্রকট , অতিসত্তর নিয়োগের বিকল্প নেই।

ডা রোকেয়া আপা খুব আফসোস করেছেন এরকম রেজাল্ট শুনে। বলেছেন এতগুলো ছেলেমেয়ের সাথে এটা করা অনুচিত। বিশেষ বিসিএস নেওয়াই হয় সংকট পূরণের জন্য।

ডা নুজহাত চৌধুরী আপাও আমাদের সাথে একমত পোষণ করেন।

শেখ সেলিম স্যার বলেছেন চিকিৎসক সংকট প্রকট, বড় নিয়োগ তো প্রয়োজন।

জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ ইকবালুর রহিম স্যার আমাদের সাথে একমত পোষণ করেছেন।

ডিজি হেল্থের ডিজি প্রফেসর ডা আবুল কালাম আজাদ স্যার বলেছেন, যদি সম্ভব হয় এই ৮৩৬০ জন চিকিৎসককে তিনি পদায়নে সহযোগিতা করবেন, মন্ত্রণালয়ের জটিলতার কারণে পারা যায় না।

মোহাম্মদ নাসিম স্যারের সাথে দেখা করতে গেলে তাঁর সুযোগ্য পুত্র ইন্জি: তানভীর শাকিল জয় ভাই জানালেন, স্যার তো বলেছিলেন এবং বাস্তবিক অর্থেই চেয়েছিলেন। তবে মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে কেন নিল না তা অত্যন্ত দু:খের বিষয়।

মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক স্যার বারবার করে বলেছিলেন, অতিসত্ত্বর ১০০০০ চিকিৎসক নিয়োগ দিবেন, আমাদের সাথে যখন দেখা হয় প্রথমে বলেন তোমাদের থেকেই নিব পরবর্তীতে। এজন্যেই তো এত চিকিৎসক পাইপলাইনে রাখা। পরবর্তীতে বলেন তা আর সম্ভবপর নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললে হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায় , স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাফেলতির কারণে ৭০০০-১০০০০ নিয়োগের কথা থাকলেও হয়নি। ঐদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলে তাদের সদিচ্ছা ছিল কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্ভব হতে দেয়নি। আবার বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় না দিলে কিভাবে হবে।

মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল স্যার বলেন, বাজেটে থাকলে অনুমোদন দিতে সমস্যা নেই। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯৭৯২ মেডিকেল অফিসার নিয়োগের জন্য আলাদা বরাদ্দ বাজেটে রয়েছে।

আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতপ্রাপ্তির জন্য বারবার স্মারকলিপি পেশ করি। একবার পিএম অফিসে আমাদের বলা হয়, আমরা অবান্তর দাবি নিয়ে দৌঁড়াচ্ছি। আমাদের মাথায় ঘিলু নেই। চা নাস্তা খেয়ে যেন বাসায় গিয়ে পড়তে বসি। প্রধানমন্ত্রীকে অনেক বড় কাজ করতে হয় , এসব ছোট বিষয় নিয়ে উনাকে বিরক্ত করা যাবেনা। আমরা শুধু জানতে চাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিকশাওয়ালা, আইসক্রিমওয়ালা যেমন আন্তরিক সাক্ষাত পান আমরা কয়েকজন তরুণ চিকিৎসক কি পেতে পারিনা? তারপর আমাদের চিঠি তারা রাখে। পরবর্তীতে শ্রদ্ধেয় সাদিক স্যারের সাথে পরামর্শ করে আমাদের সাথে সরকারি কর্ম কমিশনের একটি মিটিং ফিক্স করে দেয়।

পিএসসি তে শ্রদ্ধেয় মোহাম্মদ সাদিক স্যার, শাহ আব্দুল লতিফ স্যার, শাহজাহান আলী মোল্লা স্যার, উজ্জ্বল বিকাশ দত্ত স্যার, মোখলেসুর রহমান স্যার, আবু নেসার স্যার দের সাথে আমাদের ১.৩০ ঘন্টাব্যাপী অফিসিয়াল সাক্ষাতের সুবর্ণ সুযোগ হয়। স্যাররা বলেন, এটা পিএসসির ইতিহাসে প্রথম। তাঁরা আমাদের বলেন, তাঁরাও জানতেন ১০০০০ নেওয়া হবে। ঐ মর্মেই পরীক্ষাটা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ কারণেই এত মানুষের ভাইভা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় আর কিছু জানায়নি। বারবার নক করেছেন তাঁরা কবে মন্ত্রণালয় থেকে কোন উত্তর আসেনি। তাঁরা বলেন , অনেক যোগ্য চিকিৎসক রয়ে গেসে আরো ৮৩৬০ এর মধ্যে।

নন ক্যাডার বিধিমালা ২০১০ অনুযায়ী আমাদের রেজাল্ট হয়েছে। ঐ বিধিমালা অনুযায়ী সারকুলারে নন ক্যাডার উল্লিখিত না থাকলে রেজাল্টে নন ক্যাডার রাখা যাবে না। ৩৯ এর সার্কুলারে যা ছিল না । উপরন্তু, বিশেষ বিসিএস এ কোন নন ক্যাডার পদ রাখা হয় না। আমরা জানতে চাইলে পিএসসি থেকে বলা হয়, তাঁরা দেখেছেন যোগ্য প্রার্থী আছে তাই ভবিষ্যতে সুযোগ রাখার জন্য এরকম রেজাল্ট দিয়েছেন।

আমরা শ্রদ্ধেয় ওবায়দুল কাদের স্যারের সাথে দেখা করি। স্যার আমাদের ব্যাপারে BMA এর স্যারদের সাথে কথা বলেন। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্যারের কাছে যাই ও সব কাগজপত্র পৌঁছাই।

পরবর্তীতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এপিএস ২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু ভাই এর সাথে দেখা করে আবারও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাই। আমাদের বিষয়টি ঐদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো: নজিবুর রহমান স্যার শুনেন। আমরা অনেক ডকুমেন্ট যোগাড় করে নিয়ে যাই। আমাদের ব্যাপারটাপ পাশাপাশি চিকিৎসক সংকট, পদ সৃজনের সম্ভাব্য ক্ষেত্র ও প্রয়োজনীয়তা , সংযুক্তির কারণে উদ্ভূত সমস্যা সহ আরো অনেককিছু তুলে ধরি। স্যার সব কাগজপত্র স্ক্যান করে রাখেন। পিএম অফিস আমাদের জানায়, সংশ্লিষ্ট মহল নিয়ে ব্যাপারগুলো দেখা হচ্ছে।

আরো অনেক জায়গায় গিয়েছি। অনেককিছু জেনেছি। অনেককিছু শুনেছি।

আমরা ৫ মাস ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছি। উপরের বিশিষ্ট ব্যক্তিগন ছাড়াও অনেকে অনেককিছুই বলেছেন, অনেক রকম বুদ্ধি দিয়েছেন। আমরা সবসময় বিনম্র পন্থা বেছে নিয়েছি। আমাদের বলা হয়েছে, এ দেশে কিছুই আন্দোলন ছাড়া হয় না। রাস্তায় না নেমে হয় না। আইনী লড়াই ছাড়া হবে না। আমাদেরকে প্রধানমন্ত্রী দেখবেননা। নজরে না এলে কেউ গোণায় ধরবেনা। নানান কিছু!

আমরা চেয়েছি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চাইলে আমাদের নিয়োগ সম্ভব। আমরা প্রোটোকল ফলো করে , সুন্দর সাবলীল পথ বেছে নিয়ে নীতি নির্ধারকমহল এবং আমাদের অভিভাবকদের সাথে নিয়েই এগিয়েছি।

নতুন আরেকটি বিশেষ BCS নেওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। জেনারেল ক্যাডাররাও তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ৮৩৬০ জনের চাকরির ব্যবস্থা করা সরকার চাইলে কঠিন কোন বিষয়ই না। দেশে তীব্র চিকিৎসক সংকট রয়েছে, বাজেটও আছে, যোগ্য ৮৩৬০ জন রেডি চিকিৎসক আর সরকারের সদিচ্ছা একটু কম্বিনেশন শুধু দরকার।

অনেকে ভাবেন, একত্রে এত চিকিৎসক নিলে পরবর্তী জুনিয়র চিকিৎসকরা সুযোগ পাবেনা। ব্যাপারটি আসলে ওরকম নয়। জনবল কাঠামো পরিবর্তন করে পদ সৃজন করা হলে ২৫০০০ এর বেশি পদ তৈরি হয়। ২০০০০ জন জুনিয়ের এন্ট্রি পদে চিকিৎসক পদায়ন না করা গেলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। ৮৩৬০ জনের পদায়ন হলেও প্রচুর ঘাটতি রয়ে যাবে।

ভাবনা আসতে পারে, এ দেশে এসব কোনদিনও সম্ভব নয়। এত চিকিৎসকের পদ তৈরিও হবেনা, কিছুই হবে না। আমরা শুরু করেছিলাম একরকম কিছু না বুঝেই। এখন অনেককিছু বুঝি। যা বিগত বহু বছরে হয়নি ওরকম অনেককিছুই হচ্ছে। নতুন পদ সৃজনের প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। আমরা কাউকে বিব্রত না করে, অসংগতিগুলো তুলে ধরে এগিয়েছি।

আমাদের কাজ অব্যাহত আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিসিশন শোনা পর্যন্ত আমরা কাজ চালিয়ে যাব। আমরা জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবই জানেন। তবে জানিনা আমাদের আজকের কথাগুলো কেউ কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবেন কিনা। আমরা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন চাই। SDG গোল অর্জন সুনিশ্চিত করতে দেশের কাজে আসতে চাই। আমাদের লব্ধ জ্ঞান কাজে লাগিয়ে ভাল কিছু করতে চাই।

Share this post

scroll to top