আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে একটি এতিম প্রজন্ম তৈরি করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বেআইনি হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার সমাধান খুঁজছে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, অন্যায়ের প্রতিশোধ প্রকৃতি নিজেই নেয়। একটি বেআইনি হত্যা আরও অনেক হত্যার বিস্তৃতি ঘটায়।
নয়াপল্টনে আজ রোববার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি মাদকের উৎসমুখ বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রিজভী বলেন, চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের সময় তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে গত চার মাসে ২৫০ জন মানুষকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদের বেশির ভাগই আবার তরুণ-যুবক। তাঁরা কে কতটুকু অপরাধের সঙ্গে জড়িত, সে সম্পর্কে জনগণকে অন্ধকারে রেখে বিনা বিচারে হত্যার পেছনে সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মানুষের জীবন নিয়ে ভুল! ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য মানবাধিকারকে ঠাট্টা করা। খুনি-সন্ত্রাসীদের ন্যায় বেআইনি হত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়া।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, প্রশাসনের সহায়তায় মাদকের উৎসমুখগুলো নিয়ন্ত্রণ করেন বদিদের মতো সাংসদেরা। বদিসহ ক্ষমতাসীনদের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কীভাবে এতগুলো গোয়েন্দা সংস্থার চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে গেলেন? জাতি তা জানতে চায়। আসলে সরকারই গডফাদারদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করছে। তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হচ্ছে সরবরাহের (মাদক) উৎস পথ আটকে যাচ্ছে না কেন? তাহলে কারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মাদক ঢুকতে সহায়তা করছে? রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া কি উৎসমুখ খোলা থাকে?’
গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এমন অভিযানে দু-একটি ভুল হতে পারে। তবে নিরীহ কেউ যেন শিকার না হয়, সে বিষয়ে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের প্রসঙ্গে রিজভী এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাস প্রসঙ্গে বিএনপির নেতা রিজভী বলেন, সরকারি বহু টালবাহানার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও সরকারি কারসাজিতে খালেদা জিয়ার জামিন আটকে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট কোনো মামলায় জামিন দেওয়ার পর আপিল বিভাগ কারও জামিন স্থগিত করে এমন নজির বাংলাদেশে আর একটিও নেই। তিনি আরও বলেন, জামিন আটকে রেখে খালেদা জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন শুধু একজনের প্রতিহিংসার প্রতিফলন। এ সময় তিনি খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে কানামাছি না খেলার জন্য আহ্বান জানান।